কলকাতা লিগের দ্বিতীয় ম্যাচেও জয় ছিনিয়ে নিল ইস্টবেঙ্গল। তবে তাদের গোল মিস করার রোগটা কিছুতেই সারছে না। এদিন অজস্র গোলের সুযোগ নষ্ট করে অবশেষে জয় পেল লাল-হলুদ বাহিনী। বৃহস্পতিবার নৈহাটি স্টেডিয়ামে খিদিপুরকে ২-০ গোলে হারাল বিনো জর্জের দল। লাল-হলুদের হয়ে গোল করলেন তুহিন দাস এবং আমন সিকে। ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট ৩ ম্যাচে ৭।
কলকাতা লিগে মোহনবাগানের মতোই ইস্টবেঙ্গল জুনিয়র দলের প্লেয়ারদের শুধু খেলাতে চেয়েছিল। কিন্তু দু'টি ম্যাচ জেতে না জেতেই রং পরিবর্তন। দলের বেহাল দশা দেখে সিনিয়র দলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের দ্বারস্থ হতে হয় লাল-হলুদকে। তাঁর থেকে অনুমতি নিয়েই তিন জন সিনিয়র দলের প্লেয়ারকে মাঠে নামিয়েছিলেন বিনো জর্জ।
প্রথমে ঠিক ছিল জুনিয়র ফুটবলারদের দিয়ে কলকাতা লিগে খেলবে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু দলের অবস্থা খারাপ দেখে অনুমতি নিয়ে সিনিয়র দল থেকে তিন জন ফুটবলারকে নেওয়া হয়। শৌভিক চক্রবর্তী, গুরমিত গিল এবং মহম্মদ রাকিপকে খেলানো হয়।
আরও পড়ুন: মায়ামিতে কত নম্বর জার্সি পরে খেলবেন মেসি? কত টাকা মাইনে পাবেন আমেরিকায়
আসলে আগের ম্যাচে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল জিতলেও, দু'টি গোল হজম করেছিল তারা। তাছাড়া বহু গোলের সুযোগও নষ্ট হচ্ছে। সিনিয়র দলের প্লেয়াররা এদিন দলে যোগ দেওয়ায় অবশ্য গোল হজম করেনি লাল-হলুদ। তবে গোল মিসের সংখ্যাটা একই রকমের রয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার অবশ্য শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিল লাল-হলুদ। মূলত শৌভিক থাকায় মাঝমাঠের শক্তি বাড়ে। যে কারমে মাঝমাঠের দখল এদিন ছিল লা-হলুদের হাতে। যেটা প্লাস পয়েন্ট হয়। তবে গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয় প্রায় ৩২ মিনিট। কিছুটা একক কৃতিত্বেই বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে বক্সের সামান্য বাইরে থেকে বাঁ-পায়ের জোরালো শটে ১-০ করেন তুহিন। শটে এত জোর ছিল যে, খিদিপুরের গোলকিপার প্রিয়ন্ত সিংয়ের কিছুই করার ছিল না।
আরও পড়ুন: CFC-কে ISL ফাইনালে তুলেছিলেন স্কটিশ কোচ, তাঁকেই নতুন মরশুমে ফেরাচ্ছে চেন্নাইয়িন
এর পর প্রথমার্ধেই বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু আমন সিকে, কুশ ছেত্রী এবং অভিষেক কুঞ্জমরা গোলের মুখ খুলতে ব্যর্থ হন। এমন কী বিরতির সামান্য আগে ভালো জায়গায় ফ্রিকিক পেলেও, শৌভিকের শট গোলপোস্টের উপর দিয়ে বের হয়ে যায়। খিদিপুরের মধ্যে সেই খিদেটা কিন্তু এদিন দেখা যায়নি। তারা বিরতির আগে কিছু কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠার চেষ্টা করেছিল ঠিকই, তবে কোনওটাই কার্যকর কিছু ছিল না।
প্রথমার্ধের মতো, দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই খেলার রাশ নিজেদের হাতে নেয় ইস্টবেঙ্গল। তবে গোলের মুখ খুলতে তারা পারছিল না। ম্যাচের ৫২ মিনিটে জোড়া সেভ করেন প্রিয়ন্ত। ৭১ মিনিটে কুশ একটি দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন। গোলকিপারকে একা পেয়েও, বল জালে জড়াতে পারেননি কুশ। তাঁর শট বারের উপর দিয়ে উড়ে যায়। ইস্টবেঙ্গল চাপ বাড়াতে পারছিল না বলে, খিদিরপুরও রক্ষণের মানসিকতা থেকে বের হয়ে ধীরে ধীরে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াতে শুরু করে। গোলশোধের জন্য তাদের একটা সময়ে মরিয়া হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ২-০ করেন আমন সিকে। ফলে ম্যাচ ক্লিনসিট রেখে তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ল ইস্টবেঙ্গল। এদিন আরও বেশি গোলে জিততে পারত লাল-হলুদ বাহিনী। কিন্তু বিপক্ষ গোল বক্সে গিয়ে তারা যেন খেই হারিয়ে ফেলছিল। এই গোল করতে না পারার রোগটা যদি না কাটিয়ে উঠতে পারে ইস্টবেঙ্গল, তবে কিন্তু তাদের কপালে দুঃখ আছে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।