টিম ইন্ডিয়ার ফাস্ট বোলার মহম্মদ সিরাজের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজটি খুব স্মরণীয় ছিল। এই সিরিজের তিনটি ম্যাচে সিরাজ ২০.৮০ গড়ে পাঁচ উইকেট নেন এবং মাত্র ৪.৫২ ইকোনমি রেটে ১০৪ রান দেন। তাঁর দুরন্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে তিনি ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হন।
সিরিজ জয়ের পর সিরাজ বলেন, ‘ভালো দলের বিপক্ষে পারফর্ম করলে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আমাকে দায়িত্ব নিতে হয়েছিল। আমি ইনিংসের শুরুতে সঠিক লেন্থ বল করার চেষ্টা করেছি। একজন ফাস্ট বোলার হিসেবে আপনার ভেতরে সেই আগুন এবং আবেগ দরকার।’
এর আগে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ভারতের প্রাক্তন স্পিনার মুরলি কার্তিক সিরাজকে হায়দরাবাদি স্টাইলে অভিনন্দন জানান। বলেন, ‘মিঞা কেয়া বোলিং করতে হ্যায় আপ! সহি বোলা মে হায়দরাবাদি মে? (মিঞা কী বোলিং আপনি ইদানীং করছেন! আমি কি হায়দরাবাদিতে ঠিক বলেছি?)।’ উত্তরে সিরাজ বলেন, ‘বিলকুল স্যার, (একেবারে স্যার)।’
আরও পড়ুন: শাহবাজের উত্থান, সঞ্জু-শুভমন-সিরাজের ধারাবাহিকতা, ODI সিরিজের পর নিশ্চিন্ত ভারত
মঙ্গলবার দিল্লির বৃষ্টিতে ভেজা আবহাওয়ার সুযোগ কাজে লাগাতে মঙ্গলবার টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নেন শিখর ধাওয়ান। তাঁর এই সিদ্ধান্ত কাজে লেগে যায়। দিল্লির ২২ গজে সুবিধা করতে পারলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। ২৭.১ ওভারে মাত্র ৯৯ রানেই শেষ হয়ে গেল সফরকারীদের ইনিংস। ভারতীয় স্পিনারদের বল বুঝতেই পারলেন না ডেভিড মিলাররা।
প্রথম থেকেই ধারাবাহিক ভাবে উইকেট হারাতে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। হেনরিক ক্লাসেন, জানেমন মালান এবং মার্কো জানসেনের ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার বাকিরা কেউই দু’অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। ক্লাসেনের ব্যাট থেকে এল ৪২ বলে ৩৪ রান। চারটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। ওপেন করতে নেমে মালানের সংগ্রহ ২৭ বলে ১৫। তাঁর ইনিংসে রয়েছে তিনটি চার। এ ছাড়া মার্কো জানসেনের সংগ্রহ ১৯ বলে ১৪। বাকিরা কেউই উইকেটে থিতু হতে পারলেন না।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুরুতেই ধাক্কা দেন মহম্মদ সিরাজ। তাঁর পর ওয়াশিংটন সুন্দর, কুলদীপ যাদব, শাহবাজ আহমেদরাও নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট তুলে নিলেন। ভারতের সফলতম বোলার কুলদীপ মাত্র ৪.১ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন। বিয়র্ন ফরটুইন এবং এনরিখ নরকিয়াকে পর পর দু’বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন কুলদীপ। যদিও সেটা কাজে লাগেনি। ১৫ রানে ২ উইকেট নিলেন ওয়াশিংটন। ১৭ রানে ২ উইকেট সিরাজের। বাংলার শাহবাজ ২ উইকেট নিলেন ৩২ রান খরচ করে।
আরও পড়ুন: ৩ ম্যাচের ওডিআই সিরিজে তিন অধিনায়ক, বিশ্বরেকর্ড দক্ষিণ আফ্রিকার
জয়ের জন্য ১০০ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ভারত শুরুতে আগ্রাসী মেজাজ দেখালেও শিখর ধাওয়ান ব্যর্থ হন। তিনি মাত্র ৮ রান করে রান আউট হয়ে গেলেও উইকেটের অন্য প্রান্তে মেজাজে ছিলেন শুভমন গিল। তিন নম্বরে নেমে ইশান কিষাণও করলেন মাত্র ১০ রান। তবে ৫৮ রানে ২ উইকেট হারালেও লক্ষ্য বেশি না হওয়ায় সমস্যা হয়নি ভারতের। শুভমনের সঙ্গে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন শ্রেয়স আইয়ারও। দলকে জয়ের দরজায় পৌঁছে দিয়ে আউট হন শুভমন। ৫৭ বলে ৪৯ রান করলেন আটটি বাউন্ডারির সাহায্যে। এক রানের জন্য মিস করলেন হাফসেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত শ্রেয়স ২৮ রানে এবং সঞ্জু স্যামসন ২ রানে অপরাজিত থাকেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার ফরটুইন ২০ রান দিয়ে ১ উইকেট এবং লুঙ্গি এনগিডি ২১ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। ৭ উইকেটে তৃতীয় ওডিআই জিতে সিরিজ পকেটে পোড়েন শিখর ধাওয়ানরা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।