জ্যৈষ্ট মাসের পূর্ণিমা তিথিতে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা উৎসব পালন করা হয়। এটি ভক্তদের কাছে একটা বড় মহোৎসব। জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা দেবীর বিগ্রহকে জগন্নাথ মন্দির থেকে বাইরে নিয়ে আসা হয়। মন্দিরের বাইরে তৈরি করা হয় বিশেষভাবে সজ্জিত স্নানমঞ।
রথ যাত্রার পূর্বে খুবই মহত্বপূর্ণ হলো এই স্নান যাত্রা উৎসব। কারণ এই উৎসবের পর জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা থেকে আষাঢ়ী আমাবস্যা পর্যন্ত মন্দির বন্ধ থাকে। বিগ্রহের নিত্য পূজা চালু থাকলেও জনসাধারণের জন্য মন্দির দর্শন বন্ধ থাকে। মন্দির আবার রথ যাত্রার সময় জনসাধারণের জন্য খোলা হয়।
বলা হয় জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা যে দর্শন করতে পারে তার মত পরম ভাগ্যবান আর কেউ হয়না। তার সমস্ত রকম পাপ ধুয়ে মুছে যায়। তিনি এই জগতের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়ে যান। এই তিথিকে জগন্নাথ দেবের আবির্ভাব তিথিও বলা হয়ে থাকে। হয়। ভগবান জগন্নাথ তার ভাই বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রার সাথে তিনটি বিশাল রথে চড়েন। তিন ভাই বোনের রথ আলাদা। মহাপ্রভু জগন্নাথ দেব তার ধাম ছেড়ে গুন্ডিচা মন্দিরে যান, যা তার মাসির বাড়ি বলে কথিত আছে। সেখানে ভগবান জগন্নাথ সাত দিন অবস্থান করেন।
জগন্নাথ রথযাত্রা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
1. ভগবান জগন্নাথ শ্রীহরি বিষ্ণুর অন্যতম প্রধান অবতার। ভগবান জগন্নাথের রথযাত্রার জন্য রথ নির্মাণের কাজ শুরু হয় অক্ষয় তৃতীয়া থেকে।
2. এই রথগুলি তৈরি করতে প্রায় ২ মাস সময় লাগে। প্রতি বছর বসন্ত পঞ্চমী থেকে দশপাল্লার বনে কাঠ সংগ্রহের কাজ শুরু হয়।
3. এই রথগুলি শুধুমাত্র শ্রীমন্দিরের ছুতোর দ্বারা নির্মিত। তাদের বলা হয় ভোই সেবায়ত। ২০০ জনেরও বেশি ছুতার একসঙ্গে এই তিনটি রথ তৈরি করে।
4. প্রতি বছর রথযাত্রার জন্য নতুন রথ তৈরি করা হয়।
5. কিংবদন্তি অনুসারে, জগন্নাথ দেব যখন প্রথম পূর্ণিমায় স্নান করেছিলেন, তখন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারপর তিনি ১৪ দিন নির্জনে ছিলেন এবং ভেষজ দিয়ে চিকিত্সা করা হয়েছিল। ১৫ তম দিনে তিনি সবাইকে দর্শন দেন। তারপর থেকে প্রতি বছর রথযাত্রার আগে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়।
6. ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র জি এবং সুভদ্রা জির রথগুলি মোটা দড়ি দিয়ে টানা হয়, যাতে সারা বিশ্বের ভক্তরা যোগ দিতে আসে।