আজ, রবিবার লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা তথা পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, ‘রানিনগর–২ পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির ভোট আছে। তাই প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে।’ আর তারপরই দেখা গেল, পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতি গঠনের আগে কংগ্রেসে ভাঙন ধরল। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন রানিনগর–২ পঞ্চায়েত সমিতির দু’জন কংগ্রেস সদস্য এবং কাতলামারী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। সুতরাং খেলা ঘুরে গেল এবং বিফলে গেল মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা অধীরের চিঠি।
এদিকে আজ, রবিবার বহরমপুরের জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়ে এসে কংগ্রেসের দু’জন জয়ী পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য যোগদান করলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। তাঁদের হাতে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা তুলে দেন রানিনগরের তৃণমূল বিধায়ক সৌমিক হোসেন এবং তাঁদের স্বাগত জানান বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাওনি সিংহ রায়। এভাবে যে অধীররঞ্জন চৌধুরীকে কিস্তিমাত করে দেওয়া হবে তা কেউ ভাবতেও পারেননি। এই ঘটনার পর চাপে পড়ে গিয়েছে কংগ্রেস। সম্প্রতি ঝালদা কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছে। এবার পঞ্চায়েত স্তরেও ভরাডুবি হল।
অন্যদিকে আজ রানিনগর–২ পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেস সদস্য হানিফ শেখ এবং ঊর্মিলা খাতুন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন। এমনকী ওই ব্লকের কাতলামারি–১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান মাহফুজা বিবিও তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন। রানিনগর–২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনে অশান্তির আশঙ্কা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। ওই চিঠিতে প্রার্থীর নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছিল। যা আর লাগবে না। তবে ওই চিঠির কিছুক্ষণের মধ্যেই রানিনগর–২ পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে গেল। যদিও পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোট করে এই পঞ্চায়েত সমিতি দখল করেছিল সিপিএম–কংগ্রেস। সেটা ধরে রাখা গেল না।
আরও পড়ুন: ‘সংবিধানের অসম্মান করা হচ্ছে’, পত্র–রহস্যের মধ্যেই মেজাজি মন্তব্য রাজ্যপালের
আর কী জানা যাচ্ছে? রানিনগর–২ পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন সংখ্যা ২৭। তার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ১৩টি। বাম–কংগ্রেস জোটের দখলে যায় ১৪টি আসন। আগামীকাল সোমবার পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতি গঠনের কথা ছিল। তার আগেই দু’জন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন। তাই রানিনগর–২ পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতি গঠন করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত শুক্রবার রানিনগরে সভা করতে যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। ওই সভাকে ঘিরে ব্যাপক গোলমাল দেখা দেয়।শুক্রবারের পর পঞ্চায়েত সমিতি গঠন নিয়ে শনিবারও রানিনগর তপ্ত ছিল। আর রবিবার সব ওলটপালট হয়ে গেল।