সামনে লোকসভা নির্বাচন। ‘বিগত ৫ বছরে ইটাচুনা অঞ্চলে একদিনও লকেট দিদির দেখা নাই, তাই এবারে এখানে বিজেপির ভোটও নাই’। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এমনই পোস্টার পড়ল পাণ্ডুয়ার খন্যান কলেজ সংলগ্ন এলাকায়। গত পাঁচ বছর ধরে হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। এবারও ওখানেই তাঁকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি। লকেট চট্টোপাধ্যায় প্রচার শুরু করেছেন। ২০১৯ সালে লকেট চট্টোপাধ্যায় পরাজিত করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রত্না দে নাগকে। রত্না দে নাগ এখন পাণ্ডুয়ার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। লকেট ২০২১ সালে চুঁচুড়া বিধানসভায় প্রার্থী হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অসিত মজুমদারের কাছে পরাজিত হন। এবার লকেটকে নিয়ে চুঁচুড়ায় তাঁর দলেরই নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। তার উপর নিজের লোকসভা কেন্দ্রে লকেটকে ভোট না দেওয়ার পোস্টার পড়ল।
এদিকে বুধবার পান্ডুয়ার খন্যান পঞ্চায়েত এলাকার খন্যান চৌমাথা, কলেজ মোড়–সহ নানা জায়গায় ওই পোস্টার দেখা গিয়েছে। আর এমন পোস্টারকে ঘিরে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ওই পোস্টারে দাবি করা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে ইটাচুনা–খন্যান অঞ্চলে একদিনও লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দেখা মেলেনি। তাই এবার এখানে বিজেপির ভোটও নেই। যদিও এই পোস্টার কে বা কারা সেঁটেছেন সেটা স্পষ্ট নয়। কারণ, পোস্টারে কোনও নামের উল্লেখ নেই। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও লকেটের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছিল পান্ডুয়ায়। বিজেপি হুগলি জেলা সংখ্যালঘু মোর্চার সভানেত্রী রুখসানা বিবি এই বিষয়ে বলেন, ‘যতই পোস্টার পড়ুক যেদিন লকেটদি প্রার্থী হয়েছেন, সবার ঘুম ছুটে গিয়েছে। ওই সব পোস্টার লাগিয়ে কিছু লাভ হবে না। লকেট চট্টোপাধ্যায় জিতবেন।’
আরও পড়ুন: দিদির সঙ্গে নবান্নে দেখা করতে এলেন দাদা, লোকসভা নির্বাচনের আগে গুঞ্জন তুঙ্গে
অন্যদিকে লকেট চট্টোপাধ্যায় নির্বাচন এলেই পরিযায়ী পাখির মতো আসেন। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। জেলা পার্টির অন্দরেও লকেটকে নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। এই বিষয়ে হুগলি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক অসিত চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘যাঁরা এই পোস্টার লাগিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে আমি সহমত। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দেখা পাওয়া যায় না। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এমন নাম গোত্রহীন পোস্টারের বিরোধী। যাঁদের সৎ সাহস থাকবে তাঁরা সরাসরি প্রতিবাদ করবে। এটা সম্পূর্ণভাবে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের ফল।’
এছাড়া বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। এটা নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে বিজেপির পান্ডুয়া মণ্ডল সভাপতি অমিতাভ ঘোষের অভিযোগ, ‘এটা তৃণমূলের চক্রান্ত।’ পাল্টা পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসে সভাপতি আনিসুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা কোনও চক্রান্ত করিনি। এটা বিজেপির অন্তর্কলহ। তৃণমূলের উন্নয়নের কাছে ওরা হেরে যাবে। তাই ভুল বকছে।’ কয়েকদিন আগেও লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছিল। ওই পোস্টারে লেখা হয়, ‘কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আবেদন বহিরাগত লকেট চট্টোপাধ্যায়কে শ্রীরামপুর লোকসভায় চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। তৃণমূলকে হারাতে শ্রীরামপুরের ভূমিপুত্র চাই।’ আর নিচে আরও লেখা দেখা যায়, ‘দয়া করে কেউ আমাদের তৃণমূল ভাববেন না, আমরা বিজেপি কর্মী।’