দাদা টিকিটা দেখি? আপনার টিকিট দেখান? এভাবেই দিব্যে চলছিল কাজ। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। টিকিট পরীক্ষকের ছদ্মবেশ ধরে টাকা কামানোর ছক কষেছিলেন এক যুবক। এবার ভুয়ো টিকিট পরীক্ষককে (টিটি) গ্রেফতার করল আরপিএফ। আর তার জেরে তুমুল শোরগোল পড়ে গেল বর্ধমানে। রবিবার রাতে এই ঘটনার সাক্ষী থেকেছে হাওড়া–অমৃতসর মেলের স্লিপার কোচ। কারণ এখান থেকেই তো ভুয়ো টিকিট পরীক্ষককে গ্রেফতার করেছে আরপিএফ। পরে তাকে জিআরপির হাতে তুলে দেওয়া হয়। ভুয়ো পরিচয় দিয়ে টিকিট পরীক্ষা করার জন্য গ্রেফতার হওয়া যুবকের বিরুদ্ধে প্রতারণার ধারায় মামলা দায়ের করেছে বর্ধমান জিআরপি।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? বর্ধমান জিআরপি সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া যুবকের নাম মনোজিৎ গোস্বামী। তার বাড়ি বিহারে। ভুয়ো টিকিট পরীক্ষক হিসাবে ধরা পড়েছে। এই ছদ্মবেশ নিয়ে মানুষকে ঠকাচ্ছিল। গ্রেফতার হওয়া মনোজিৎকে বর্ধমান আদালতে তোলে বর্ধমান জিআরপি থানা। তদন্তের স্বার্থে ধৃতকে দু’দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন করে পুলিশ। এই আবেদনে সম্মতি জানিয়েছেন বর্ধমান আদালতের বিচারক। একেবারে টিটি’র পোশাকে হাওড়া–অমৃতসর মেলে উঠে এস–৪ স্লিপার কোচে উঠে যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা করছিল এই যুবক। দেখে বোঝার উপায় ছিল না এই যুবক ভুয়ো টিকিট পরীক্ষক।
কেমন করে ধরা পড়ল? সাদা পোশাকে টিকিট পরীক্ষা করছিল মনোজিৎ গোস্বামী। যাতে কেউ ধরতে না পারে তার জন্য টাইয়ের কাছে ভুয়ো টিকিট পরীক্ষকের পরিচয়পত্র পর্যন্ত লাগানো ছিল। তবে ট্রেনটি যখন বেলমুড়ি স্টেশন পৌঁছাল তখন ট্রেনে কর্তব্যরত আরপিএফের মনোজিতের চালচলন দেখে সন্দেহ হয়। তাকে বেশ কিছুক্ষণ অনুসরণ করা হয়। তারপরই মনোজিৎকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন ওই আরপিএফ। অবশেষে ভেঙে পড়ে জানিয়ে দেয় মনোজিৎ সে ভুয়ো টিকিট পরীক্ষক। মনোজিতের কাছ থেকে একটি ট্যাব এবং মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: কামালগাজিতে যুবককে গুলি করে খুনের অভিযোগ, টাকা নিয়ে ফেরার পথেই হামলা
আর কী জানা যাচ্ছে? এই যুবক মনোজিৎ গোস্বামী বিহারে থাকলেও তিনটি ভাষায় তুখোর কথা বলতে পারে বলে সূত্রের খবর। বিহারে বসবাস করলেও রেলের পুরো অপারেটিং সিস্টেমটা জানে। তাই আগেও সে ভুয়ো টিকিট পরীক্ষক সেজে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে খবর। তাছাড়া বিহারে থাকাকালীন এই কাজে তার হাতেখড়ি হয়। তারপর নানা ট্রেনে এমন সেজে মানুষের থেকে টাকা আদায় করত সে। এবার উঠে পড়েছিল হাওড়া–অমৃতসর মেলে। সেখানেই শুরু করেছিল প্রতারণার কাজ। যা ধরা পড়ে গেল ট্রেনেই।