প্রাক্তন মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফেরাতে প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু মাওবাদীদের একাংশ অভিযোগ, যাঁরা কোনওদিন জেল খাটেননি, তাঁদেরও পুনর্বাসন প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে, অথচ এক দশক জেল খাটার সত্বেও প্রকৃত মাওবাদীরা এখনও সেই প্যাকেজ থেকে বঞ্চিত।
এবার বিষয়টি নবান্নে পৌঁছে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিলেন প্রাক্তন মাওবাদীরা। এই বিষয়ে রবিবার সকালে লালগড়ের ঝাঁটিবনি মাঠে বিনপুর ও লালগড় থানা ৫০ জন প্রাক্তন মাওবাদী বৈঠক করলেন। উগরে দেন তাঁদের ক্ষোভ। পাশাপাশি এদিনের বৈঠক থেকে ছত্রধর মাহাতোকে মুক্তির দাবিও জানানো হয়।
এখানেই শেষ নয়, মূলস্রোতে ফিরে আসা প্রাক্তন এই মাওবাদীরা জানিয়েছেন, প্রথমে বীরবাহা হাঁসদার কাছে যাবেন তাঁরা। ওখানে গিয়ে সুরাহা না হলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে নবান্নে যাবেন। যাতে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের দুঃখ-দুর্দশা বুঝতে পারেন।
তাঁদের বক্তব্য, ‘ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় আমাদের মূলস্রোতে ফেরানোর জন্য চাকরির প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু যে কোনওদিন জেল খাটেনি, তাঁরাও এই প্যাকেজের সুবিধা পেয়েছেন। অথচ এক দশক ধরে জেল খাটার সত্বেও আমরা এখনও সেই প্যাকেজ থেকে বঞ্চিত।’ প্রাক্তন মাওবাদীদের দাবি, ‘ এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি থানায় ও ডিআইবিতে জমা দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু এখনও কোনও সুরাহা হয়নি। তাই এবার আমরা নবান্নে যাব। দিদিকে পুরো বিষয়টি জানাব। আমাদের দাবি ন্যায্য দাবি কিনা, উনি বিবেচনা করবেন।’
প্রাক্তন মাওবাদী ভরত সরেন বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন মাওবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে দশ বছরের বেশি জেল খেটেছি। দিদি শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। অনেকেই এই প্যাকেজ পেয়েছে। কিন্তু আমরা পাইনি। থানায় নথি জমা দিয়েছি। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। কোন মাধ্যমে গেলে সুরাহা হবে, সেজন্য আমাদের কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলাম।’
এদিনের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন একদা কিষেণজির ছায়াসঙ্গী থেকে শুরু করে শশধর মহাতোর স্কোয়াডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা। খুন, অস্ত্র আইন-সহ একাধিক বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগেএই প্রাক্তন মাওবাদীরা জেলও খেটেছেন। তবে এখন প্রত্যেকেই জামিনে মুক্ত রয়েছেন। ফিরে এসেছেন জীবনের মূলস্রোতে। বিনপুর ও লালগড় থানা মিলে মোট ১৭০ জন প্রাক্তন মাওবাদী রয়েছেন।