উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার জেরে মঙ্গলবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল কালিয়াগঞ্জে। রাজবংশী ও আদিবাসী সংগঠনের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে একেবারে তুলকালাম পরিস্থিতি। পরিস্থিতি ক্রমেই হাতের বাইরে চলে যেতে থাকে। তার মধ্য়েই কালিয়াগঞ্জ থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। থানা চত্বরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। কার্যত থানা ছেড়ে পালাতে শুরু করেন পুলিশকর্মীরা। সব মিলিয়ে একেবারে ভয়াবহ পরিস্থিতি।
থানা চত্বরে দাঁড় করিয়ে রাখা পরিত্যক্ত গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।
এদিকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে উত্তরবঙ্গে রয়েছেন। আর তার মধ্যে কালিয়াগঞ্জ থানায় অগ্নিসংযোগ। কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে গোটা এলাকা। একাধিক পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন বলে খবর। পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় নামানো হয়। সূত্রের খবর, একাধিক পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করেও ক্ষোভের পারদ নামেনি। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সূত্রের খবর, রায়গঞ্জ সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছে। কার্যত অগ্নিগর্ভ কালিয়াগঞ্জ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন থানা ঘেরাও কর্মসূচি ছিল। সেই সময় এলাকায় ব্যারিকেড করা হয়েছিল। কিন্তু আচমকাই সেই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে উত্তেজিত জনতা। এরপর শুরু হয় ইট বৃষ্টি। তারপর থানা চত্বরে ঢুকে পড়ে উত্তেজিত জনতা।
এরপরই থানা চত্বরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রাথমিকভাবে আতঙ্কে পুুলিশকর্মীরা পালাতে শুরু করেন। একাধিক বাইক ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। থানায় গিয়ে একেবারে তাণ্ডব চালায় উত্তেজিত জনতা। কার্যত ধ্বংসস্তুপের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। পুলিশ অসহায়ের মতো তাকিয়ে দেখে গোটা ঘটনা। পরে পুলিশ এসে জল দিয়ে কোনওরকমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, যেভাবে পুলিশকর্মীরা ওই নাবালিকার দেহ নিয়ে গিয়েছিল তা নিয়েও ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা।
এদিকে এদিনের ঘটনার পরে দেখা যায় মাটিতে পড়ে রয়েছে পুলিশের টুপি। মাটিতে পড়ে রয়েছে প্যান্ট। অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছেন পুলিশকর্মীরা। থানা চত্বরে থাকা আসবাবপত্রেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকী জনরোষ যে কোন মাত্রায় হতে পারে এদিনের ঘটনা তারই প্রমাণ ।