গত কয়েকদিন ধরেই বেসুরো গাইছেন আলিপুরদুয়ারে দলের জেলা চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী। দলের একাধিক কর্মসূচিতে তাঁকে বিশেষ দেখা যাচ্ছে না। সম্প্রতি দলের তরফে বিজেপির জনপ্রতিনিধিদের বাড়ির সামনে অবস্থানে বসেছিল তৃণমূল। কিন্তু সেখানেও গরহাজির ছিলেন মৃদুল গোস্বামী। তখন থেকেই দলের অন্দরে চর্চা চলছিল। তবে এনিয়ে অবশ্য তিনি নিজেও আর রাখ ঢাক করতে চাননি। নিজের অভিমানের কথা প্রকাশ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন মৃদুল গোস্বামী। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সংগঠনে তাঁর প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেলে তিনি তাঁর পুরানো পেশাতে ফিরে যাবেন। আসলে তিনি আইনজীবীর পেশাতে ফের ফিরে যেতে চেয়েছেন। অনেকটাই দলের প্রতি অভিমানে।
দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল করছেন মৃদুল গোস্বামী। দলের যখন দুর্দিন ছিল তখনও জলপাইগুড়িতে দলের পতাকাটা আঁকড়ে ধরে থাকতেন মৃদুল। চা বলয়ে তৃণমূলের রাজনীতিতে অত্যন্ত পরিচিত নাম মৃদুল গোস্বামী। অনেকের মতে, তখনও দলের একাংশের সঙ্গে তাঁর বনিবনা হত না। তবে পরে দল ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু দলের অন্দরমহলের খবর, মৃদুল গোস্বামীর সঙ্গে বর্তমানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইকের ঠান্ডা লড়াই চলছে বলে খবর। আর তার জেরেই দলের একাধিক কর্মসূচি থেকে দূরত্ব রাখা শুরু করেছেন তিনি।
এদিকে মৃদুল গোস্বামীর অভিমানের কথা শুনেই বৃহস্পতিবার তাঁর অনুগামীরা তাঁর বাড়িতে এসে রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করেন। মৃদুল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই জেলা দলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আমাকে অন্ধকারে রাখা হচ্ছে। জেলায় মিটিং হচ্ছে। আমি জানতে পারছি না। জেলার সভাপতি মিটিং করছেন। আর আমি জেলা চেয়ারম্যান হয়ে তা জানতেই পারছি না। সেকারণে ধরে নিতে হচ্ছে আমার আর গুরুত্ব নেই। আমি সেকথাই প্রকাশ্য়ে বলেছি। শীর্ষ নেতৃত্বকেও বিষয়টি জানিয়েছি।
তবে দলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক অবশ্য় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমাদের জেলায় কোনও সমস্যা নেই। আমাদের মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই।
তবে জেলা সভাপতি ভুল বোঝাবুঝি না থাকার কথা বললেও দলের নীচুতলায় অবশ্য এনিয়ে জোর চর্চা চলছে। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সেক্ষেত্রে মৃদুল গোস্বামীর মতো নেতা দলের অন্দরে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেল তার ফল ভুগতে হবে তৃণমূলকে। এতে আখেরে সুবিধা হতে পারে বিরোধীদের। সেক্ষেত্রে দলের অন্দরে দ্বন্দ্ব মেটানোটাই এখন তৃণমূলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।