উত্তরবঙ্গ মানেই যে নদীর নাম সবার আগে মনে আসে সেটা হল তিস্তা। উত্তরের বুক চিরে বয়ে গিয়েছে এই নদী। তবে এবার তিস্তাও একাধিক জায়গায় তার গতিপথ বদলে ফেলেছে বলে খবর। অনেকের মতে, গত অক্টোবর মাসে সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদ ভেঙে তিস্তায় আসে হড়পা বান। এরপর বিপুল জলোচ্ছাসে ভেসে যায় দুপাড়। সম্ভবত তার জেরেই তিস্তা নদীর গতিপথ ক্রমশ বদলে যাচ্ছে।
উপগ্রহের মাধ্যমে সেই ছবি ধরা পড়েছে। আর সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে একাধিক জায়গায় তিস্তার গতিপথ বদলে গিয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার জীবন জীবিকা এই তিস্তার উপর নির্ভরশীল। জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা রয়েছে তিস্তা নদীর ধারে।
এদিকে এই গতিপথ বদলের ছবি দেখে হতবাক সেচ দফতর। ইতিমধ্য়েই গোটা বিষয়টি রাজ্য ও কেন্দ্রের নদীর সংক্রান্ত যে সমস্ত দফতরগুলি রয়েছে তাদের কাছে জানানো হয়েছে। খবর আনন্দবাজার সূত্রে। কারণ তিস্তার গতিপথ বদলে গেলে বহুক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে। এমনকী আগামী দিনে বর্ষাকালে তিস্তায় যখন জল বৃদ্ধি হবে তখন জনপদের আরও কাছাকাছি চলে আসতে পারে নদী।
এদিকে তিস্তা নদীর সঙ্গে একটা আন্তর্জাতিক বিষয়ও রয়েছে। সেক্ষেত্রে এটা একেবারেই হালকা করে দেখা হচ্ছে না। কারণ তিস্তা নদীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের জীবন যাত্রার বিষয়। সেকারণে অত্যন্ত সতর্ক হয়ে পা ফেলতে চাইছে সেচদফতর।
এদিকে এবার সিকিমে হ্রদ বিপর্যয়ের জেরে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল গোটা এলাকা। গত ৪ অক্টোবর ভোররাতে তিস্তা নদীতে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে ভেঙে যায় বাঁধ। লোনাক হ্রদ ঝাঁপিয়ে পড়ে তিস্তার উপর। তারপরেই তিস্তার ভয়াবহ হড়পা বানে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয় এবং ৭৭ জন নিখোঁজ হন। এছাড়া রাজ্যের প্রায় ৮৮,০০০ জন মানুষ প্রভাবিত হয়েছিলেন। বহু দেহ ভেসে এসেছিল পশ্চিমবাংলায় । এছাড়াও, বেশ কিছু দেহ ভেসে গিয়েছিল ওপার বাংলায়। পাশাপাশি ভেসে যায় বহু ঘরবাড়ি। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিকিমে। সেই সময় সিকিমে বহু পর্যটক আটকে পড়েছিলেন। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে সিকিম।