মধ্যপ্রদেশের ভোপালে আকাঙ্খা শর্মা খুনের ঘটনায় উদয়ন দাসকে মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করে বাঁকুড়া আদালত। আজ, বুধবার, তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করলেন বাঁকুড়ার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সুরেশ বিশ্বকর্মা। এদিন সাজা ঘোষণার পর আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উদয়ন নির্বিকারে বলে, ‘আমার কোনও অনুশোচনা নেই। এবার প্রয়োজনে আমরা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে যাব।’
বাঁকুড়ার বাসিন্দা প্রেমিকা আকাঙ্খা শর্মার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদয়নের কীর্তি প্রকাশ্যে আসার পর ২০১৬ সালে সারা দেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সে বছর ২৭ ডিসেম্বর রাতে বচসার পর আকাঙ্খাকে গলা টিপে খুন করে একটি টিনের বাক্সে তাঁর দেহ পুরে দেয় উদয়ন। পরে উদয়ন তার শোয়ার ঘরে সেই টিনের বাক্সের ওপর কংক্রিটের গাঁথনি তুলে দিয়ে সমাধি বানিয়ে মার্বেল দিয়ে ঢেকে দেয়।
বেশ কয়েক দিন পরে আকাঙ্ক্ষার মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে বাঁকুড়া পুলিশ পৌঁছে যায় ভোপালের গোবিন্দপুরা থানার সাকেতনগরে উদয়নের বাড়িতে। তবে সেখানে কারও দেখা পাওয়া যায়নি। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি উদয়নের বিরুদ্ধে আকাঙ্ক্ষাকে অপহরণের মামলা দায়ের করে আকাঙ্খার পরিবার। ওই বছর ১ ফেব্রুয়ারি ভোপালে গিয়ে উদয়নকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর পরের দিন, ২ ফেব্রুয়ারি আকাঙ্খার দেহাবশেষ উদ্ধার হয়।
শুধু এই ঘটনা নয়, এর আগে বাবা বীরেন্দ্রকুমার দাস ও মা ইন্দ্রাণী দাসকে খুন করে ছত্তিশগড়ের রায়পুরের বাড়ির বাগানে পুঁতে দিয়েছিল উদয়ন। আকাঙ্খাকে খুনের ঘটনায় পুলিশি জেরায় সে কথা নিজেই জানায় সে। ২০১৭–র ৫ ফেব্রুয়ারি উদয়নের বাবা–মার কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ।
সরকারি আইনজীবী এ চ্যাটার্জি বুধবার বলেন, ‘আমরা মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করেছিলাম। আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে। আমরা আদালতের এই সিদ্ধান্তে খুশি। হত্যার দায়ে তাকে যাবজ্জীবন ও ২০,০০০ টাকা জরিমানা এবং প্রমাণ লোপাটের জন্য আরও ২ বছর কারাদণ্ড এবং ২০০০ টাকা জরিমানা করেছে আদালত।’ উদয়নের আইনজীবী অভিষেক বিশ্বাস বলেন, ‘অপহরণের দায়ে প্রাথমিক মামলা দায়ের করা হয়। পরে আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে খুন ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ আনা হয়েছিল। কিন্তু এখনও অপহরণের অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি বিপক্ষ আইনজীবী।’