সম্প্রতি সংখ্যালঘুদের স্কলারশিপে বিপুল পরিমাণে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তে নির্দেশ দিয়েছে। আর এবার এসটি, এসসি এবং ওবিসি শংসাপত্র নকল করে স্কলারশিপের কোটি কোটি টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন উত্তর দিনাজপুরের এক ব্যক্তি। এই অভিযোগ জানিয়ে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন। তাঁর দাবি, এই ঘটনার পিছনে একটি প্রতারণা চক্র রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। তাই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন: সংখ্যালঘু বৃত্তি নিয়ে দুর্নীতি, সরকারের লোকসান ১৪৪ কোটির, এফআইআর করল সিবিআই
মামলাকারীর নাম হল মীর সেলিম। তাঁর দাবি, রাজ্যের স্কুলগুলিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ বেশ কিছুদিন ধরেই এ রাজ্যে একটি চক্র সক্রিয় র। যারা জাতিগত শংসাপত্র জাল করে স্কলারশিপের টাকা তুলে নিচ্ছে। এই ঘটনায় তিনি স্থানীয় পুলিশ এবং বিডিওদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, তা সত্ত্বেও এই প্রতারণা চক্র বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন মামলাকারী। শুধু তাই নয়, পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছিল তবে তারা জামিন পেয়ে যায় বলে আবেদনে জানিয়েছেন মামলাকারী।
উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ করেছিলেন সংখ্যালঘু স্কলারশিপ কেলেঙ্কারির জাল অনেকদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। সংখ্যালঘু স্কলারশিপের জন্য জাতীয় পোর্টালে যে আবেদন করা হয়েছে তার মধ্যে ৮৩০ টি প্রতিষ্ঠান থেকে জাল আবেদন সামনে এসেছে। এক্ষেত্রে গত পাঁচ বছরে বাংলায় ১৪৪.৮৩ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি দাবি করেছেন, পশ্চিমবঙ্গে এরকম ৩৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা এই ধরনের স্কলারশিপ পেয়েছে। তা জাল বলে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী স্কলারশিপের ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের আবেদন যাচাই করার জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একজন করে নোডাল অফিসার থাকার প্রয়োজন। সেই নোডাল অফিসারের অনুমোদন মিললেই স্কলারশিপ পেয়ে যান সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য যারা নোডাল অফিসার হিসেবে ছিলেন তারা সকলেই তৃণমূলের নেতা। তৃণমূলের এই সমস্ত নেতারা কোটি কোটি টাকা লুট করার সঙ্গে জড়িত। শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন, সংখ্যালঘু স্কলারশিপ কেলেঙ্কারি বাংলার সবচেয়ে বড় দুর্নীতি। প্রাথমিকভাবে এই দুর্নীতির পরিমাণ ১৪৪ কোটি টাকা হলেও এর থেকেও অনেক বেশি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছিলেন।