ডিম ভাতের পরিবর্তে স্কুলের মিড ডে মিলে দেওয়া হয়েছিল নুন ভাত। সেই সংক্রান্ত মামলায় বরখাস্ত শিক্ষিকাকে আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে কাজে ফেরানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। এদিন আদালতে নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে নেন জেলা স্কুল পরিদর্শক জানান, বেআইনিভাবে শিক্ষিতাকে বরখাস্ত করা ভুল হয়েছে। স্কুল পরিদর্শক ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় তাঁকে জরিমানা করেননি বিচারপতি। তবে ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
আরও পড়ুন: মিড ডে মিলে ‘নুন ভাত’, সাসপেন্ড হওয়া শিক্ষিকা আদালতের দ্বারস্থ, রিপোর্ট তলব
চুঁচুড়ার একটি বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের পাতে নুন ভাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এর শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা ঘোষকে বরখাস্ত করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তবে শিক্ষকরা দাবি ছিল, পড়ুয়াদের যেদিন নুন ভাত খাওয়ানো হয়েছিল সেদিন তিনি স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না। এমনই দাবি জানিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। সেই সংক্রান্ত মামলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে রিপোর্ট তলব করে কলকাতা হাইকোর্ট।
ওই শিক্ষিকার দাবি ছিল, তাঁকে বেআইনিভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মামলার বয়ান অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৯ সালে। ওই সময় স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন উচ্চপদস্থ কর্মীরা। সেখানে তাঁরা দেখতে পান মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে নুন ভাত দেওয়া হয়েছে। সেই ঘটনার পরেই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা এবং শর্মিষ্ঠাকে সাসপেন্ড করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তবে দুদিন আগে থেকে ছুটি নিয়েছিলেন শর্মিষ্ঠা। তাঁর অভিযোগ, ৪ বছর আগে তাঁকে সাসপেন্ড করা হলেও কোনও বিভাগীয় তদন্ত হয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সাসপেনশন উঠে যাওয়ায় তিনি এখন কাজে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর ক্ষেত্রে সাসপেনশন তোলা হয়নি।
শর্মিষ্ঠার আইনজীবীর যুক্তি ছিল, কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করতে গেলে সেক্ষেত্রে প্রথমে স্কুলের তরফে জেলা পরিদর্শককে অভিযোগ জানানো হয়। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর জেলা পরিদর্শক মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে রিপোর্ট পাঠান। পরিদর্শকের রিপোর্টের ভিত্তিতেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয়নি বলে । স্কুলের তরফে কোনও অভিযোগে জানানো হয়নি। জেলা পরিদর্শক নিজেই শিক্ষিকার সাসপেনশন চেয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি। এদিন ওই শিক্ষিকাকে কাজে ফেরানোর পাশাপাশি বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।