‘কাপল’-দের ছবি ও রিলের গুঁতোয় সরস্বতী পুজোয় তিতিবিরক্ত হয়ে উঠলেন হাওড়ার মল্লিকঘাটের ফুল ব্যবসায়ীরা। একাংশের দাবি, ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ‘পারফেক্ট’ পোস্টের আশায় সরস্বতী পুজোর (ভ্যালেন্টাইনস ডে'ও ছিল) সকালে এত যুবক-যুবতী ভিড় জমিয়ে ফেলেন যে ব্যবসা লাটে ওঠার জোগাড় হয়েছিল। তাঁরা এমনভাবে কোনও কোনও দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন যে আদতে যাঁরা ফুল কিনতে আসছিলেন, তাঁরা ভিড় হয়েছে ভেবে অন্যত্র চলে যাচ্ছিলেন বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয় যে একটা সময় বচসাও বেঁধে যায়।
কিন্তু সরস্বতী পুজোর সকালে মল্লিকঘাটে কেন ছবি তোলার জন্য ভিড় জমে গেল? ছবিশিকারীদের বক্তব্য, ভারতের অন্যতম বড় ফুল বাজারে এত রঙের সমাহার থাকে যে তাতে মুগ্ধ হয়ে যেতে হয়। আর পাশেই আছে গঙ্গা এবং হাওড়া ব্রিজ। সবমিলিয়ে এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়। তাই ছবি তোলার একেবারে আদর্শ ডেস্টিনেশন হল মল্লিকঘাটের ফুলের বাজার। বছরভরই সেখানে শ্যুটিং চলে। কেউ বিয়ের আগে প্রি-ওয়েডিং শ্যুট করেন। কেউ আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ও রিল পোস্ট করার জন্য শ্যুট করে থাকেন। সরস্বতী পুজোর সকালেও সেটার ব্যতিক্রম হয়নি।
ফুল ব্যবসায়ীদের একাংশের বক্তব্য, সরস্বতী পুজোর সকালে এমনিতেই প্রবল চাপ থাকে। একেবারে টাটকা ফুল দিয়ে দেবী সরস্বতীর আরাধনা করার জন্য অনেকেই সকাল-সকাল বাজারে চলে আসেন। ফুল কিনে নিয়ে গিয়ে পুজো করেন। কিন্তু এবার ছবি এবং ভিডিয়ো তোলার হিড়িকে দোকানের সামনে অহেতুক ভিড় জমতে থাকে। তাঁরা নিজেরা তো ফুল কেনেননি। উলটে যাঁরা ফুল কিনতে আসছিলেন, তাঁরা দোকানে খুব ভিড় ভেবে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ছবি বা ভিডিয়ো তোলা হোক, তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু তরুণ-তরুণীদের হুজুগে ব্যবসার ক্ষতি মেনে নেওয়া হবে না।
এমনিতে সরস্বতী পুজো হল বাঙালির কাছে প্রেমদিবস। আর এবার তো প্রেমদিবস তথা ভ্যালেন্টাইনস ডে'র সঙ্গে পড়ে সরস্বতী পুজো। ফলে উন্মাদনা আরও বেশি ছিল। একেবারে ট্র্যাডিশন মেনে অঞ্জলি দিয়ে সকাল-সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন ‘কাপল’-রা। শাড়ি এবং পঞ্জাবি পরে দিনভর চুটিয়ে প্রেম করেন। আর সেইসব মুহূর্ত স্মরণীয় রাখতে তোলেন ছবি। সঙ্গে অনেকেই রিলের পথে হাঁটেন।