অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তাঁর ছবি প্রকাশ করায় রাজ্যপালের ওপর ক্ষুব্ধ সিপিআইএম নেতৃত্ব। দলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যিনি নিজে প্রচার চান না, তাঁর ছবি প্রকাশ করা কোন সৌজন্যের প্রকাশ? এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বুদ্ধবাবুর গুণমুগ্ধরা। তাঁদের প্রশ্ন, বুদ্ধবাবুকে দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল? না কি নিজের প্রচারে গিয়েছিলেন?
বলে রাখি, শনিবার অষ্টমীর সন্ধ্যায় কলকাতার পাম অ্যাভিনিউতে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সন্ধে ৬টা নাগাদ সেখানে পৌঁছন তিনি। প্রায় ৩০ মিনিট সেখানে ছিলেন সস্ত্রীক ধনখড়। বেরিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। এর পরই রাজ্যপালের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করা হয় সাক্ষাতের ছবি।
মোট ৪টি ছবি পোস্ট করা হয় রাজভবন থেকে। তার মধ্যে ৩টি ছবিতে দেখা যাচ্ছে বুদ্ধবাবুকে। অসুস্থ বুদ্ধবাবু কাত ফিরে বিছানায় শুয়ে। নাকে লাগানো অক্সিজেনের নল। চারিদিকে থরে থরে সাজানো বই। সামনে একটি টেবিল। বুদ্ধবাবুর এমন ছবি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তাঁর গুণমুগ্ধরা। সোশ্যাল সাইটে তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
বুদ্ধবাবুর ছবি প্রকাশ্যে আনায় এর পরই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সিপিআইএম। দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, অসুস্থ ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাঁর অনুমতি ছাড়া ছবি প্রকাশ করা কোন সৌজন্যের পরিচয়? রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হয়ে রাজ্যপাল কি এই কাজ করতে পারেন? বিশেষ করে বুদ্ধবাবুর মতো প্রচারবিমুখ মানুষের সঙ্গে? যিনি প্রচারে আসার আশঙ্কায় হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হতে চান না?
এর আগে রাজ্যপালের দায়িত্ব পাওয়ার পর গত বছর ২৮ অগাস্ট বুদ্ধবাবুর বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সেবারও প্রকাশ্যে এসেছিল বুদ্ধবাবুর একটি ছবি। তবে সেই ছবি বুদ্ধবাবুর কিছুটা পিছন থেকে তোলা হয়েছিল। ফলে মুখটি স্পষ্ট করে দেখা যায়নি। তবে বোঝা গিয়েছিল বিছানার ওপর বসে রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলছেন তিনি।
এবার শয্যাশায়ী বুদ্ধবাবুর ছবি প্রকাশ করায় রাজ্যপালের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরাও। তাদের অনেকেরই জিজ্ঞাসা, বুদ্ধবাবুর সঙ্গে দেখা করতে, না নিজের প্রচারে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল?