করোনায় যখন দশদিকে ত্রাহিরব তখন দশভূজার আবাহনের পরিকল্পনা করতে বসলেন পুজো উদ্যোক্তারা। বৃহস্পতিবার কলকাতার পুজো কমিটিগুলি বৈঠক করে একটি প্রস্তাবিত গাইডলাইন তৈরি করেছেন। প্রশাসনকে এই প্রস্তাবগুলি জানানো হবে। তার পর হবে পুজো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
করোনা মহামারির জেরে এবছর ইদ, পয়লা বৈশাখ-সহ একাধিক পরব পালন করা যায়নি। এবার আসছে দুর্গাপুজো। আর বুধবার নবান্নে তা নিয়ে পুজো উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, সবাই যেন মাস্ক পরে সেটা ক্লাবগুলোকে দেখতে হবে। পুজোটা করতে হবে তো?
মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকে পুজোর প্রস্তাব পড়তেই আশায় বুক বেঁধে ঝাঁপিয়েছেন কলকাতার পুজো উদ্যোক্তারা। রীতিমতো ১৭ দফার গাইডলাইন বানিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসে কলকাতার পুজো উদ্যোক্তাদের সংগঠন ফোরাম ফর দুর্গোৎসব। সেই বৈঠকেই রাখা হয়েছে একাধিক প্রস্তাব।
উদ্যোক্তাদের প্রস্তাব অনুসারে
1. পুজো করতে হবে ছোট করে। প্রতিমা বা মণ্ডপ খুব বড় করা যাবে না।
2. পুজোয় কোনও চমক রাখা যাবে না। পুজো হবে সাদামাঠা।
3. মণ্ডপের ভিতরের সজ্জাও হবে আড়ম্বরহীন।
4. মণ্ডপ এমন করে তৈরি করতে হবে যেন দর্শকদের ভিতরে ঢুকতে না হয়।
5. মণ্ডপ চত্বরে প্রবেশদ্বারে থাকবে থার্মাল স্ক্যানার। গায়ে জ্বর থাকলে ঢুকতে দেওয়া হবে না মণ্ডপে।
6. দর্শকদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
7. একবারে ২৫ জনের বেশি মানুষকে মণ্ডপ ও প্রতিমা দর্শন করতে দেওয়া হবে না।
8. প্রতিদিন প্রতিমা ও মণ্ডপ স্যানিটাইজ করতে হবে।
9. এলাকাও স্যানিটাইজ করতে হবে পুজো কমিটিকেই।
10. দিনের বেলাও চলবে ঠাকুর দেখা। সেজন্য সমস্ত আয়োজন রাখতে হবে পুলিশকে।
11. আলোক সজ্জাও হবে বাহুল্যবর্জিত।
12. মণ্ডপ চত্বরে ২টি স্টলের মাঝে রাখতে হবে নির্দিষ্ট দূরত্ব।
13. স্টলে খাবার তৈরি করা চলবে না। বসে খাওয়াও চলবে না।
14. পুজোর উপাচারে দিতে হবে হবে গোটা ফল।
15. মণ্ডপশিল্পীদের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব পুজো কমিটির।
কিন্তু প্রশ্ন হল, বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেপ্টেম্বরে ভারতে করোনা সংক্রমণ চরমে পৌঁছবে। সেক্ষেত্রে পুজোর আয়োজনের কল্পনা কতটা বাস্তবোচিত সেই প্রশ্ন উঠছে।