শীতলকুচি গুলিকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তদন্ত করছে সিআইডির বিশেষ দল (সিট)। কিন্তু, ঘটনার এতদিন কেটে যাওয়ার পরেও সিআইএসএফ জওয়ানদের জবানবন্দি নিতে পারেনি সিআইডি। এর আগেই তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়েছিল রাজ্যের এই তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু, সেই রিপোর্ট অসম্পূর্ণ ছিল। মামলাকারীর আইনজীবিদের এই দাবির ভিত্তিতে সিআইডিকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ।
বিধানসভার নির্বাচন চলাকালীন কোচবিহারের শীতলকুচি বুথে চারজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছিল। ঘটনায় বুথে প্রহরারত সিআইএসএফ জওয়ানদের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সিআইডির একটি বিশেষ দল শীতলকুচির ঘটনায় তদন্ত শুরু করে। এরইমধ্যে এই ঘটনায় দুটি আলাদা জনস্বার্থ মামলা কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়।
যার মধ্যে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা সিরাজ মীর। নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে তিনি এই জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে সিআইএসএফের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল জনস্বার্থ মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, যারা জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন তারা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে। এত দূরে থাকার পর তারা কিভাবে ঘটনার কথা জানল? ফলে এই জনস্বার্থ মামলা গ্রহণযোগ্য নয় বলে তিনি দাবি জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে, একটি জনস্বার্থ মামলার আইনজীবী ফিরদৌস সামিমের যুক্তি ছিল, শীতলকুচিতে যে ঘটনা ঘটেছিল তার ফলে ভোটারদের মনে ভীতি সঞ্চার করা হয়েছে। যার ফলে ভোটের হার কমেছে যা গণতন্ত্রের ক্ষতি।
এদিকে, রাজ্যের পক্ষ থেকে এ নিয়ে সিআইএসএফের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলা হয়। তাদের বক্তব্য, সিআইএসএফ তদন্ত সহযোগিতা না করার ফলে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এর ভিত্তিতে সিআইএসএফ এবং সিআইডি উভয়কেই রিপোর্ট দিতে হবে কলকাতা হাইকোর্টে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে।