দোল উৎসবে মেতে উঠেছে আপামর বাঙালি। রাজ্যের নানান প্রান্তে সকাল থেকেই শুরু হয়েছে রং খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবে জনসংযোগে তৎপর হয়েছেন রাজনৈতিক নেতারাও।
রবিবার সকাল ৮টা থেকেই রং খেলা শুরু হয়ে যায় কলকাতায়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে এবার জলরঙের থেকে কিছু দূরে থাকলেও দোলের বাজারে চাহিদা বেড়েছে আবিরের। সে ক্ষেত্রেও কৃত্রিম আবিরের তুলনায় ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে ভেষজ আবির।
এ দিন দক্ষিণ কলকাতার প্রতাপাদিত্য রোডে বাসিন্দাদের সঙ্গে আবির খেলতে দেখা যায় তৃণমূল নেত্রী মালা রায়কে। তিনি বলেন, ‘আজ ও কাল, দুই দিন ধরে সব মানুষকে নিয়ে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করছি। এখানে শামিল হয়েছেন এলাকার বৃদ্ধ, মহিলা ও শিশুরা। দোলে প্রতি বছরই এ ভাবে সবাইকে নিয়ে আনন্দে মেতে থাকি।’
উৎসবকে জনসংযোগের অন্যতম মুখ্য হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চল রাজনৈতিক মহলে নতুন নয়। মালা রায় অবশ্য জানান, ‘জনসংযোগ তো ৩৬৫ দিনই রয়েছে। আজ সে সব নয়। আজ শুধু উৎসবে সবাই মিলেমিশে আনন্দ করার দিন।’
এ দিন উত্তর শহরতলির সোদপুরের বনবিতানে মহা সমারোহে বসন্তোৎসব পালন করছেন স্থানীয় অধিবাসীরা। সকাল থেকে নাচে-গানে-আবৃত্তিতে দোল উদযাপনে শামিল সকলে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন বাচিক শিল্পী জগন্নাথ বসু ও ঊর্মিমালা বসু। জগন্নাথ বসু বলেন, ‘বসন্তের এই উৎসব আমাদের এমনিই রাঙিয়ে দেয়। এখানো এসে প্রাণ-মন ভরে যাচ্ছে। না এলে মিস করতাম।‘
এ দিন সকাল থেকে রঙের উৎসবে মেতে উঠেছেন পাটুলিবাসীও। বসন্তোৎসব পালন হচ্ছে নাচ-গান ও আবির খেলা দিয়ে। এখানে উৎসবে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে বিশেষ ভাবে সক্ষমরা।
রাজ্যবাসীকে দোল উৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, উৎসবে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদনও তিনি জানিয়েছেন। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে উৎসবের আনন্দ ম্লান করতে না পারে, সে বিষয়েও তিনি রাজ্যবাসীকে সতর্ক করেছেন।
এ দিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় রং খেলার উপরে এ বছর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে শান্তিনিকেতনে। সেই কারণে এখানে উৎসবের আনন্দ এবার কিছু ফিকে। তবে প্রতি বছরের মতোই রবীন্দ্রসংগীত ও রবীন্দ্রনৃত্য পরিবেশন করেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা।
নদিয়ার মায়াপুরে সকাল থেকে শুরু হয়েছে দোলযাত্রার অনুষ্ঠান। ভক্তিগীতি ও রাধাকৃষ্ণের বন্দনায় উৎসব পালন করেন ভক্তজন। রাজ্যের সর্বত্রই শান্তিতে পালন হচ্ছে দোল উৎসব।