গার্ডেনরিচে বহুতল বিপর্যয়ের ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিম এবং জমির এক মালিক মহম্মদ সরফরাজ ওরফে পাপ্পু। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন নতুন তথ্য পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। জমির মালিকের অভিযোগ, ওয়াসিম ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে জমি হাতিয়ে বেআইনি নির্মাণ শুরু করেছিল। এমনকী আদালতে যাওয়ার আগেই প্ল্যান, নকশা ছাড়া জমিতে দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু করে দিয়েছিল ওয়াসিম। জোর খাটিয়ে জমির উপর বেআইনি বহুতল নির্মাণের কথা স্বীকার করে নিয়েছে ওয়াসিম। শুধু তাই নয়, জমি না দিলে সে জমির মালিকদের প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ গার্ডেনরিচকাণ্ডে ক্ষতিপূরণ ঘোষণায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গ? রিপোর্ট চাইল কমিশন
জানা গিয়েছে, সরফরাজ প্রথমে জমি দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে নথিপত্র ছাড়াই ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রোমোটার। এরপর সরফরাজ রাজি হলেও এই জমির অন্য মালিক তথা সরফরাজের ভাই তাতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। এরপর জমি না দিলে তাদের দুজনকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল ওয়াসিম। এমনই অভিযোগ তুলেছেন সরফরাজ। যদিও পুলিশের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, জোর করে জমি নেওয়ার কথা বলা হলেও আদতে থানায় এ নিয়ে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। ফলে ওয়াসিমের মতো জমির মালিকরাও সমান অপরাধী। সরফরাজের অন্য এক ভাইয়ের খোঁজ চালানো হচ্ছে। তাঁকেও জেরা করা হবে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, জমি হাতে পাওয়ার পরেই জলাশয় বুজিয়ে তাতে নির্মাণ কাজ শুরু করে দেয় ওয়াসিম। অভিযোগ বহুতল নির্মাণের জন্য মাটি এবং বালি মেশানো সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমাণের সামগ্রী। শুধু তাই নয়, বাড়ি তৈরির সামগ্রী কম টাকায় ওয়াসিমকে বিক্রি করেছিল এক সরবরাহকারী। সেক্ষেত্রে সিমেন্টের দাম নেওয়া হয়েছিল বস্তা পিছু ২০০ টাকা করে। তার ফলে সস্তার সিমেন্টে থাম যেমন শক্তপোক্ত হয়নি, কংক্রিটের ঢালাইও শক্তপোক্ত ছিল না।
কোনও প্ল্যান না থাকায় থামও নিজের মতো করে বানিয়ে ফেলেছিল। এরফলে, একেকটি থামের চওড়া আলাদা আলাদা। পাঁচতলায় ইট গাঁথনি শুরু হওয়ার পর প্ল্যান ছাড়াই বাথরুম ও অন্যান্য ঘরের দেওয়াল তৈরি করা হয়। আর তাতেই ভারসাম্য রক্ষা না হওয়ায় বাড়িটি ভেঙে পড়ে।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার বিকেলে ফরেনসিকের পদার্থবিদ্যার বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তাতে জানা গিয়েছে, নির্মাণের জন্য নিম্নমানের মশলা ব্যবহার করা হয়েছে।