নতুন বছর (২০২৪) পড়ে গিয়েছে। কিন্তু তারপরও কিছুই পাল্টায়নি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২৩ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের জেরে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মারা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় কর্তৃপক্ষের গুরুতর ত্রুটির দিকেই এবার আঙুল তুলল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। গত অগস্ট মাসে বাংলা প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবেই এটা ঘটেছে বলে কমিশনের পর্যবেক্ষণ। এই অপূরণীয় ক্ষতির জেরে মৃত ছাত্রের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ যাতে দেওয়া হয় তার সুপারিশ করেছে।
এদিকে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন, প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য এবং সদস্যা বিচারপতি মধুমতী মিত্র এই সুপারিশ করেন। ডিসেম্বর মাসেই এই সুপারিশ করা হয় বলে খবর। তবে ক্ষতিপূরণের সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের নেওয়ার কথা। মানবাধিকার কমিশনের ক্ষতিপূরণের সুপারিশ জানানো হয়েছে মৃত ছাত্রের পরিবারকে। এমনকী মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে ইউজিসি’র নিয়ম মেনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের সংস্কার করতে বলা হয়েছে। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে জানাতে হবে।’
অন্যদিকে আর একটি সুপারিশ করেছে মানবাধিকার কমিশন। সেটি হল—যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভর্তি হওয়া পড়ুয়াদের হস্টেলে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রাক্তনীদের হস্টেল থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। হস্টেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ ছিল না বলে তোপ দেগেছে মানবাধিকার কমিশন। মৃত ছাত্রটির ন্যায্য পাওনা সত্ত্বেও হস্টেলে খাতায়–কলমে ঠাঁই পায়নি। প্রাক্তনীকে ধরে সে মেন হস্টেলে জায়গা পায়। হস্টেলে কোথাও সিসি ক্যামেরা না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার কমিশন। অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের তালিকায় পুলিশ অফিসারদের তথ্য থাকার কথা। সেটা নেই কেন? প্রশ্ন তুলেছে কমিশন।
আরও পড়ুন: কতটা অসুস্থ হয়ে এসএসকেএমে ‘কালীঘাটের কাকু’? কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করল বিজেপি
এছাড়া ইউজিসি’র নিয়ম মেনে হস্টেল ব্যবস্থা এখনও কেন হল না? এই প্রশ্নও তোলা হয়েছে মানবাধিকার কমিশনের তরফে। কাজ বাকি রয়েছে বলে যাদবপুরের অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের অন্যতম সদস্য তথা বাংলার অধ্যাপক রাজ্যেশ্বর সিং স্বীকার করেন। জুটা’র সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘মেন হস্টেলের ওই র্যাগিং কাণ্ডে জড়িত কয়েকজন ছাত্র এখনও বহাল তবিয়তে ঘুরছেন। র্যাগিং বিরোধী স্কোয়াড, কমিটি তাঁদের শাস্তির সুপারিশ করলেও সেটা কার্যকর হয়নি।’ আর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বক্তব্য, ‘উপাচার্য নিয়ে জটে কয়েকজন দোষীর শাস্তির প্রক্রিয়া থমকে আছে। ইউজিসি’র সব নিয়ম মানা যাচ্ছে না।’