দলে ফিরলেও জিতেন্দ্র তিওয়ারি পুরনো পদে ফেরাবে না তৃণমূল। শাসকদলের তরফে এমনই খবর মিলেছে। সত্যিই জিতেন্দ্র তৃণমূলে থাকেন কি না তা পরীক্ষা করেই ফের তার গুরুত্ব বাড়ানোর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করবে দল। তৃণমূলের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন আসানসোল পুরনিগমের পদত্যাগী মুখ্য প্রশাসক তথা দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আসানসোলের অনুন্নয়নের জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে কাঠগড়ায় তুলে তিনি পুরমন্ত্রীকেই এক চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। তাতে তাঁর দাবি ছিল, রাজনৈতিক কারণে স্মার্টসিটি প্রকল্পের ২,০০০ কোটি টাকা আসানসোলকে নিতে দেয়নি রাজ্য সরকার। এমনকী বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের ১,৫০০ কোটি টাকাও একই কারণে পাননি আসানসোলবাসী। বদলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বললেও তা রাখেননি ফিরহাদ হাকিম।
পর দিন জিতেন্দ্রকে কলকাতায় তলব করে তৃণমূল। কিন্তু তিনি আসেননি। এসব যখন চলছে তখন উত্তরবঙ্গে ছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৮ ডিসেম্বর কলকাতায় ফিরে তিনি জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানান। তার আগে ১৭ ডিসেম্বর সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেন জিতেন্দ্র।
জিতেন্দ্র ইস্তফা দিতেই বেঁকে বসেন বাবুল সুপ্রিয়। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে জিতেন্দ্র তিওয়ারিও বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন বুঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করেন তিনি। তাতে শামিল হন রাজ্যের অন্যান্য বিজেপি নেতারাও। পরিস্থিতি প্রতিকূল বুঝে পরদিনই ভোল বদলান জিতেন্দ্র। কলকাতায় পৌঁছে বৈঠকে বসেন তৃণমূল নেতা অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে। বেরিয়ে জানান, ভুল বোঝাবুঝি মিটে গিয়েছে। তৃণমূলেই থাকছেন তিনি।
তবে সব যে মেটেনি তা বোঝা যাচ্ছে ক্রমশ। তৃণমূল সূত্রের খবর, আপাতত জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে আসানসোল পুরনিগমের মুখ্য প্রশাসক বা পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতির পদ ফেরানো হচ্ছে না।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব সূত্রের খবর, জিতেন্দ্র যে কায়দায় বিদ্রোহ করেছেন তাতে তাঁকে পদ ফিরিয়ে দিলে পরে দলের অন্দরে এই প্রবণতা বাড়বে। তাছাড়া বিজেপিতে জায়গা না পেয়ে পুরনো দলে একপ্রকার ফিরতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তার পর জিতেন্দ্রর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় শো-কজের মুখে পড়তে হয়েছে সায়ন্তন বসু ও অগ্নিমিত্রা পালকে। এই পরিস্থিতিতে জিতেন্দ্র যে ফের বিজেপিমুখি হবেন না সেব্যাপারেও নিশ্চিত হতে পারছে না দল। ফলে আপাতত তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ ও পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক পদ ছাড়া কোনও পদ রইল না জিতেন্দ্র তিওয়ারির কাছে।