তীব্র দাবদাহে বাংলার মানুষ এখন সেদ্ধ হয়ে গিয়েছে। আবহাওয়া দফতরের ঘোষণা অনুযায়ী, ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে পারদ সর্বত্র। একইসঙ্গে বেড়েছে আপেক্ষিক আর্দ্রতা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও রাস্তায় বেরিয়ে কাজ করতে হয় অসংখ্য মানুষকে। আবার অনেকে খাবার বাড়ি নিয়ে গিয়ে খান। এমন ফুটন্ত আবহে বাংলার মানুষের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘মা ক্যান্টিনে’ যুক্ত হচ্ছে টক–ডাল। মাত্র ৫ টাকায় মিলবে ভাত, আম দিয়ে টকডাল, সবজি আর ডিমসিদ্ধ। যা এই রৌদ্রতপ্ত পরিবেশে শরীর ভাল রাখবে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটতে চলেছে? কলকাতায় মা ক্যান্টিন রয়েছে ১৩৩টি। সেখানে পথচলতি মানুষ, অফিস যাত্রী এবং ফুটপাথবাসীও পাঁচ টাকায় গরম খাবার কিনে খান। একদিকে পেট ভরা খাবার অন্যদিকে সস্তায় পুষ্টিকর খাবার পেয়ে থাকেন সকলে। এখন এটা পথচারীদের কাছে বড় ভরসা। কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে মাত্র ৫ টাকায় এই খাবার দেওয়া হলেও সরকারকে মাথাপিছু ১০ টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য আধিকারিক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘কাঁচা আমে থাকে প্রচুর পরিমাণ সাইট্রিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড, টারটারিক অ্যাসিড। যা এই তীব্র গরমে রক্তে অম্ল ও ক্ষারের সমতা রক্ষা করে। কাঁচা আম ক্লান্তি দূর করে, হজম ক্ষমতা বাড়ায়। তাই মেনুতে সামান্য এই বদল আনা হচ্ছে।’
আর কী জানা যাচ্ছে? কলকাতা পুরসভার সমাজকল্যাণ ও নগর দারিদ্র দূরীকরণ দফতর সূত্রে খবর, পাঁচ টাকায় ভাত, মসুর ডাল, সবজি, ডিমসিদ্ধ সবাই পেতেন। এই তীব্র গরমে টক–ডালের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাতে বিপুল পরিমাণ মানুষের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। আবার রসনাতৃপ্তিও হবে। সরকারি হাসপাতালের রোগীর পরিবারের সদস্যরাও এই খাবার খেয়ে থাকেন। তাই তাঁদেরও উপকার হবে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ‘মা ক্যান্টিনের ৮টি কেন্দ্র চালু রয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই টক–ডালের পরিকল্পনা অভিনব। বাংলার পথচলতি মানুষের কথা ভেবে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই দফতরের মেয়র পারিষদ মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর পরিজনরা এতে উপকৃত হবেন। এই গরমে এমন খাবার তুলে দিয়ে বাংলার মানুষের স্বাস্থ্য ভাল রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভায় এই বিষয়ে বৈঠক রয়েছে। সেখানেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে কবে থেকে টক ডাল–সহ খাবার পাবেন মানুষজন। ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছিল মা ক্যান্টিন।