স্বাস্থ্যসাথী কার্ড কোনওভাবে প্রত্যাখ্যান করা যাবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতে বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যান করার অভিযোগ উঠছে। আর এবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে অস্বীকার করায় কার্যত বিনা চিকিৎসায় এক রোগীর মৃত্যু হল। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ায়। কলকাতার আলিপুরের একটি হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে অস্বীকার করেছে বলে অভিযোগ। ওই রোগীর নাম স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পূর্ত দফতরের কর্মী।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করল স্বাস্থ্য দফতর, জারি হল নয়া বিজ্ঞপ্তি
জানা গিয়েছে, স্বপন বাবু শুক্রবার অফিসে যাওয়ার পর হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন এরপর তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, পেসমেকার বসাতে হবে। তবে সেই হাসপাতালে পেসমেকার না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। এরপর তাঁকে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে হাসপাতালের তরফে রোগী পরিবারকে জানানো হয় এই মুহূর্তে তাদের স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। ফলে চিকিৎসার জন্য ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা জমা করতে হবে। তারপরে পেসমেকার বসানোর জন্য আলাদা খরচা দিতে হবে। তবে এক ধাক্কায় রোগী পরিবারের পক্ষে এতগুলি টাকা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না। ফলে বাধ্য হয়ে তারা রোগীকে এসএসকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেই পথেই রোগীর মৃত্যু হয়।
রোগী পরিবারের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হচ্ছে যে সব হাসপাতালেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ করা হবে। কিন্তু আলিপুরের হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়া হয়নি। এই ঘটনায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন রোগী পরিবারের সদস্যরা। এদিকে, ওই হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি হল স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প। এই প্রকল্প চালু হয়েছিল ২০১৬ সালে। যার মাধ্যমে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকার বার্ষিক স্বাস্থ্য বীমা দেওয়া হয়ে থাকে। এই প্রকল্পে প্রায় ২ হাজার ২০০টি স্বাস্থ্য পরিষেবার সুবিধা রয়েছে। এই কার্ড ফিরিয়ে দেওয়া এবং অন্যান্য অভিযোগের ভিত্তিতে একশোরও বেশি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে, ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিকাল এস্টাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনও ব্যবস্থা নেওয়া নিয়েছিল।