বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চলছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। সেই আবহে রাজভবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি নিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করায় রাজ্য রাজ্যপালের সংঘাত আরও বেড়েছে। আর এবার রাজ্যপালের পালটা নির্দেশ জারি করল রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত ক্রমশ বেড়ে চলেছে। বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য সরকার জানিয়ে দিয়েছে রাজভবনের চিঠির ভিত্তিতে কোনও কাজ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: জারি রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত, এরই মাঝে ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ বোসের
রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফে নতুন করে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তাতে সরকারি বিধির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘রাজভবনের চিঠির ভিত্তিতে কোনও কাজ করার প্রয়োজন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যই শেষ কথা। রাজভবনের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন নেই।’ প্রসঙ্গত, দুদিন আগেই রাজভবন থেকে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সরকারের নির্দেশ মানতে বাধ্য নয়। রাজ্যপালের অধীনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সমস্ত কর্মী উপাচার্যের নির্দেশ মেনেই কাজ করবেন। অন্য কারও নির্দেশ মানবেন না। সরকারি নির্দেশকে উপাচার্য মান্যতা দিলে তবেই তা গ্রাহ্য হবে। আর এবার উচ্চ শিক্ষা দফতর পালটা নির্দেশিকা জারি করায় স্বাভাবিকভাবে অন্য মাত্রা পেল রাজ্য রাজ্যপালের সংঘাত।
প্রসঙ্গত, রাজভবনের বিজ্ঞপ্তি জারি পরে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে রাজভবনের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারিকে চিঠি দেওয়া হয়। তাতে জানানো হয়, নিয়ম অনুযায়ী নির্দেশিকা শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে দেওয়া হয়। কিন্তু, এক্ষেত্রে তা হয়নি। এমনকী শিক্ষা দফতরের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। তাই শিক্ষা দফতর রাজ্যপালের নির্দেশকে অবৈধ বলে মনে করছে। কার্যত তা বুঝিয়ে দিতেই শিক্ষা দফতর পালটা বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বলে মনে করছে শিক্ষা মহল।
এদিকে, সোমবার রাজ্যপালকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করে শিক্ষা দফতরকে না-জানিয়ে উপাচার্য নিয়োগ করছেন রাজ্যপাল। আচার্যর ক্ষমতা সুনির্দিষ্ট।’ এমনকী রাজ্যপালের মনোভাবকে ‘তালিবানি’ বলেও কটাক্ষ করেন। তাঁর কটাক্ষ, যেভাবে রাজ্যপাল সংবিধান এবং শিক্ষা দফতরের আইন মানছেন না তাতে মনে হচ্ছে উনি ২০০৯-এর সিভিল অ্যাপিল দেখেননি। তিনি এক চেটিয়া স্বৈরাচারী মনোভাব দেখাচ্ছেন। এইসব থেকে রাজ্যপালকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেন ব্রাত্য বসু। এমনকী এনিয়ে বিধানসভায় প্রস্তাব আনার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে বলেও জানান ব্রাত্য বসু।