তৃণমূলের বিধায়ক-পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। বিধানসভায় এসে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে নিজের ইস্তফার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন শুভেন্দু। স্পিকারও সেই ব্যাখ্যায় ‘সন্তুষ্ট’। পদত্যাগের পর্ব মিটিয়ে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের ঘরে অনেকটা সময় কাটিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু। যা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে।
তৃণমূল ছাড়ার পর এই বিরোধী দলনেতাই প্রথম বলেছিলেন, ‘ওঁর যাত্রা শুভ হোক। ধর্মনিরপেক্ষতা ওঁর মধ্যে বেঁচে থাকুক এবং সবার মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়ুক।’ তাতে শুভেন্দুর মনটা সেদিন উৎফুল্লই হয়েছিল। আর তার পরে এদিন বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দেখা করে যেন সেই কৃতজ্ঞতাই জানান শুভেন্দু অধিকারী।
বিধানসভায় সেই আলোচনার পরে এদিন শুভেন্দু জানান, স্পিকার জানতে চেয়েছিলেন, পদত্যাগের চিঠি আমি নিজে লিখেছি কি না, কেউ আমাকে দিয়ে চাপ দিয়ে লিখিয়েছে কি না। আমি বলেছি, আমি স্বেচ্ছায় নিজের হাতে চিঠি লিখে হস্তাক্ষর করে জমা দিয়েছি। স্পিকার তা মেনে নিয়েছেন। স্পিকার বিমানবাবুও জানান, শুভেন্দুর পদত্যাগ গৃহীত হয়েছে।
স্পিকারের ঘর থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের ঘরে গিয়ে বসেন। রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত সময় আসার আগে মাঝের সময়টা তিনি ওই ঘরেই কাটিয়েছেন। পরে সেই ঘরে আসেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও। সকলেই এই সাক্ষাৎকে ‘সৌজন্যমূলক’ আখ্যা দিলেও বর্তমান ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে এই ঘরোয়া বৈঠক রাজনৈতিক শিবিরের নজর কেড়েছে।
উল্লেখ্য, পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে শুভেন্দু ছিলেন তৎকালীন সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠের প্রবল বিরোধী। বিজেপি ঘুরে সেই লক্ষ্মণবাবু যখন কংগ্রেসে আসেন, তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন মান্নান। এই সূত্রেই এদিন বেশ কিছু ক্ষণ আলোচনা চলে বিরোধী নেতার ঘরে। শুভেন্দুর কথায়, ‘বহু বছর আগে থেকে আমাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক। এখানে রাজনীতির কথা বলতে আসিনি।’
বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে আজ, মঙ্গলবার কেতুগ্রাম গিয়েছেন তিনি। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে গেরুয়া মঞ্চে এটাই শুভেন্দুর প্রথম কর্মসূচি।