বৃষ্টি হচ্ছে বিক্ষিপ্তভাবে কিন্তু টানা বৃষ্টি নেই। তার সঙ্গেই কিছুদিন আগে ভয়াবহ গরম পড়েছিল বাংলায়। তার জেরে একেবারে মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চিংড়ি চাষে। একটি বাংলা দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে রাজারহাটের একাধিক মৌজায় বিঘার পর বিঘা জমিতে চিংড়ির চাষ হয়। সেই চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি করা হয়। কিন্তু সেই চিংড়ি চাষিদের এবার মাথায় হাত। ঠিক কী হয়েছে ঘটনাটি?
সূত্রের খবর, মূলত বাগদা চিংড়ি ও ভেনামি চিংড়ি কিছু ক্ষেত্রে মরে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হলেও চিংড়িকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা এখনও সম্ভব নয়। চাঁদপুর অঞ্চলের মিঠাখোল সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় ৪ হাজার ২০০ বিঘা মতো চিংড়ি চাষের ক্ষেত্র রয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে সেই চিংড়ি চাষের সামনে বড় বিপদ। মৎস্যচাষিদের একাংশের মতে, প্রচন্ড গরম ও বৃষ্টি এখনও পর্যাপ্ত না হওয়ায় ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে চিংড়ি। যার জেরে চিংড়িকে বাঁচানো এখন বড় লক্ষ্য মৎস্য চাষিদের কাছে। প্রায় ৫০ কোটি চিংড়িকে বাঁচিয়ে রাখাটাই এখন চাষিদের কাছে বিরাট চ্যালেঞ্জ।
এদিকে এই চিংড়ি চাষের সঙ্গে প্রচুর পরিবার জড়িয়ে রয়েছেন। অত্যন্ত লাভজনক এই চিংড়ির চাষ। চিংড়ির চারা ছাড়ার অন্তত তিন মাসের মধ্যেই তা বাজারে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে তা রফতানির প্রক্রিয়া শুরু হয়। মাছিভাঙা, বগডোবা, পানাপুকুর সহ বিভিন্ন এলাকার ভেড়ি থেকে চিংড়ি তুলে তা রফতানি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু চিংড়িই যদি না বাঁচে তবে তা রফতানি করা হবে কীভাবে?
তবে মৎস্য দফতরের মতে, জোরে বৃষ্টি না হওয়ার জেরে সমস্যাটা তৈরি হয়েছে। প্রচন্ড গরমে ভেড়ির জল কিছুটা শুকিয়ে যাচ্ছে। সেকারণে অক্সিজেনের অভাব তৈরি হচ্ছে। সেকারণে রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তবে টানা বৃষ্টি হলে সেই পরিস্থিতিটা আর থাকবে না।
তবে রফতানি মার খেলেও ব্যবসায়ীদের একাংশের মতে বর্তমান পরিস্থিতিতে কলকাতার বাজারে চিংড়ির যোগান বাড়তে পারে। আর যোগান বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই দাম কিছুটা কম হতে পারে। সেক্ষেত্রে একদিকে যেমন রফতানির যথাযথ করতে না পারলে চাষিরা সেভাবে লাভের মুখ দেখতে পাবেন না।
তেমনি যদি রফতানি না হয় তবে সেই চিংড়ি চলে আসবে কলকাতার বাজারে। যার জেরে হাসি ফুটবে কলকাতার চিংড়িপ্রেমীদের মুখে। রফতানি করলে মোটামুটি ৬০০ টাকা কেজি হয়। কলকাতার বাজারে এলে সেই লোভনীয় চিংড়ির দাম কোথায় দাঁড়ায় সেটাই দেখার।