প্রয়াত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ‘নিরপেক্ষ’ আম্পায়ার পিলু রিপোর্টার ৷ ভারতের এই আম্পায়ারের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর ৷ মস্তিষ্ক সংক্রান্ত একটি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন শয্যাশায়ী ছিলেন ভারতের প্রাক্তন এই আম্পায়ার। রবিবার মুম্বইয়ে প্রয়াত হন পিলু রিপোর্টার।
ভারতের এই আম্পায়ার বিশ্ব ক্রিকেটে নজির গড়েছিলেন। বিশ্বের প্রথম নিরপেক্ষ আম্পায়ার হিসেবে টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন তিনি ৷ দীর্ঘ ২৮ বছর ঘরোয়া ক্রিকেট এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচ পরিচালনার কাজ করেছেন পিলু রিপোর্টার ৷
আরও পড়ুন: ভারতে ফিরে আসছেন বুমরাহ, খেলতে পারবেন না নেপালের বিরুদ্ধে ম্যাচ, হঠাৎ কী ঘটল?
১৯৮৪ সালে দিল্লিতে ভারত বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যে টেস্ট ম্যাচের হাত ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে অভিষেক হয় পিলুর। ম্যাচে দারা দোটিওয়ালার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ১৯৮৬ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ‘নিরপেক্ষ’ আম্পায়ার হিসেবে টেস্টে দায়িত্ব পালন করেন পিলু। প্রাক্তন পাকিস্তান অধিনায়ক ইমরান খানের অনুরোধে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে আম্পায়ারিং করেছিলেন তিনি ৷ তাঁর সঙ্গে ভিকে রামাস্বামী দ্বিতীয় আম্পায়ার ছিলেন।
দুই দেশের খেলায় তৃতীয় কোনও দেশের আম্পায়ার দায়িত্ব পালন করা তথা নিরপেক্ষ আম্পায়ারিংয়ের ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করতে এই পদক্ষেপের সূচনা করেছিলেন সেই সময়ের পাকিস্তান অধিনায়ক ইমরান খান। পরে ১৯৯২ সালে টেস্টে একজন নিরপেক্ষ আম্পায়ারের দায়িত্ব পালনের আইন জারি করেছিল আইসিসি।
আরও পড়ুন: NCA-তে রাহুলের ফিটনেস টেস্ট ৪ সেপ্টেম্বর,তার পরেই সম্ভবত WC-এর দল ঘোষণা- রিপোর্ট
সেই পিলু রিপোর্টারের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কাকতালীয় ঘটনা হলেও, ১৯৯৩-৯৪ সালে হিরো কাপের ম্যাচে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামীতে ভারতের মুখোমুখি হয়েছিল জিম্বাবোয়ে। সেই ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল হিথ স্ট্রিকের। আর সেই ম্যাচেই ভারতের এসকে শর্মার সঙ্গে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন পিলু রিপোর্টারও। মাত্র ৪৯ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হিথ স্ট্রিকের প্রয়াত হওয়ার খবরে যখন ক্রিকেট বিশ্ব শোকে আচ্ছন্ন, তখন সকলের আড়ালেই চলে গেলেন পিলু রিপোর্টারও। তবে হিরো কাপের সেই ম্যাচের স্মৃতি উস্কে দিয়ে টুইট করেছেন বীরেন্দ্র সেহওয়াগ। শুধু সেহওয়াগ নয় তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভিভিএস লক্ষ্মণও।
পিলু রিপোর্টারের ক্যারিয়ারের সেরা প্রাপ্তি সম্ভবত অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে আয়োজিত ১৯৯২ ক্রিকেট বিশ্বকাপে আম্পায়ারিংয়ের সুযোগ। একমাত্র ভারতীয় আম্পায়ার হিসেবে এই সুযোগ পেয়েছিলেন পিলু। মাঠে তাঁর মজাদার শারীরিক ভঙ্গিমার জন্য খেলোয়াড় থেকে শুরু করে দর্শকদের কাছে রীতিমতো জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তাঁর ‘মিল্কশেক বাউন্ডারি সিগন্যাল’ তো রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪টি টেস্ট এবং ২৮টি ওয়ান ডে ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন পিলু রিপোর্টার ৷ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩টি ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ৷ যার মধ্যে দু’টি ম্যাচে রেফারি হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন ৷ ১৯৯৩ সালে মুম্বই টেস্টে শেষ বার আম্পায়ারিং করেছিলেন তিনি ৷