লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে নারদ কাণ্ডে নতুন করে তৎপর হয়েছে সিবিআই। আবার একবার ম্যাথু স্যামুয়েলকে তলব করল সিবিআই। তাঁকে নিজাম প্যালেসে এসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় আছেন বাংলার প্রাক্তন ও বর্তমান মন্ত্রী, বিধায়ক থেকে শুরু করে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র, বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। আজ, বুধবার যদিও অভিযুক্তদের ডেকে পাঠানো হয়নি। সিবিআই এই মামলার সূত্রে তলব করেছে অভিযোগকারী ম্যাথু স্যামুয়েলকে। আগামী ৪ এপ্রিল নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে ম্যাথুকে। যদিও সিবিআইকে পাল্টা চিঠি দিয়ে ম্যাথু স্যামুয়েল জানিয়েছেন, কলকাতায় যাতায়াত ও হোটেল খরচ না দিলে যাওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, নারদ কাণ্ডে গোয়েন্দাদের হাতে নতুন করে বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ এসেছে। আর সেই সূত্র ধরেই ম্যাথু স্যামুয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় সিবিআই। আগামী ৪ এপ্রিল তাঁকে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারদ স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো সামনে আসে। ২০১৪ সালে গোপন ক্যামেরায় ভিডিয়ো তোলা হয়েছিল। সেই ভিডিয়ো–তে তৃণমূল কংগ্রেসের মুকুল রায়, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী, সুলতান আহমেদ, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম এবং ইকবাল আহমেদকে টাকা নিতে দেখা যায় ক্যামেরার সামনে। সাংবাদিক ম্যাথুর নেতৃত্বেই স্টিং অপারেশন চালানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর ফলক ঢাকা নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক, রাজ্যপালকে গো–ব্যাক স্লোগান তৃণমূলের
অন্যদিকে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এভাবে তলব ‘পলিটিক্যাল ড্রামা’ বলে কটাক্ষ করেছেন ম্যাথু স্যামুয়েল। তিন মাস আগেও একবার ম্যাথু স্যামুয়েলকে তলব করা হয়েছিল। এবার সিবিআইয়ের হাতে বেশ কিছু নতুন তথ্য প্রমাণ আসে। সেই তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই তলব করা হয়েছিল ম্যাথু স্যামুয়েলকে। কিন্তু তখন হাজিরা দেননি ম্যাথু। তিনি তখনও স্পষ্ট জানিয়ে ছিলেন, তাঁর যাতায়াত এবং কলকাতায় থাকার খরচ বহন করতে হবে সিবিআইকে। লোকসভা নির্বাচনের মুখে তাঁকে আবারও তলব করা হয়েছে। এবারও তিনি যান কিনা সেটাই দেখার। আগামী ৪ এপ্রিল সকাল ১১টায় ডেকে পাঠানো হয়েছে ম্যাথুকে নিজাম প্যালেসের সিবিআই দফতরে। ১৯ এপ্রিল থেকে ভোট শুরু হচ্ছে বাংলায়। তার ঠিক ১৫ দিন আগে এই ডেকে পাঠানোর ঘটনা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়া ম্যাথুকে চিঠি পাঠিয়েছেন কলকাতার সিবিআই অফিসের ডেপুটি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসার রিসিনামোল কে সি। ম্যাথুকে তিনি চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমি যে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছি, সেই মামলার বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আপনাকে কলকাতার নিজাম প্যালেসে এসে দেখা করতে হবে।’ নারদ কাণ্ডে পরে সিবিআইয়ের পাশাপাশি তদন্তে নামে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন তৎকালীন বর্ধমানের পুলিশ সুপার এসএমএইচ মির্জা। ২০২১ সালে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মদন মিত্রকে। পরে অবশ্য তাঁরা জামিন পান।