লোকসভা নির্বাচন এখন দুয়ারে। সুতরাং সব রাজনৈতিক দলগুলি এখন প্রস্তুতি নিয়ে ভোটে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে। কিন্তু তার মধ্যেই ঘটে গিয়েছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। আর তাই এখন উত্তরবঙ্গ নিয়ে বেজায় উদ্বিগ্ন সকলে। কারণ প্রথম দফায় নির্বাচন হতে চলেছে উত্তরবঙ্গের তিন জেলায়। তার আগে উত্তরবঙ্গে ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয় আছড়ে পড়েছে। তাই আজ, সেখানে ছুটে গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানের তিন জেলা হল— কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার। সেখানে জলপাইগুড়িতে নেমে এসেছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। যা নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে বলে সরাসরি তোপ দাগলেন ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী।
এই বিপর্যয়ের পর সেখানে ভোট কেমন করে করানো হবে সেটা নিয়ে চাপে পড়েছেন সকলেই। ইতিমধ্যেই গতকাল রাতে সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, সোমবার সেখানেই আছেন তিনি। তারপর জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার যান মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়েও মজা করেছেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। আর তা নিয়ে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে অভিষেক সুর চড়িয়ে বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ কারও হাতে থাকে না। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এখানে। মুখ্যমন্ত্রী রাতেই এখানে পৌঁছন। অতন্দ্র প্রহরীর মতো তিনি পাশে ছিলেন মানুষের। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতে ২০১৯ সালে বিজেপি জিতেছিল। সাংসদ ছিল বিজেপির। তাঁরা মানুষের পাশে কোনও দিন থাকেনি। যাঁরা এসব নিয়ে ব্যঙ্গ করছে তাঁদের প্রকৃত চেহারা মানুষের সামনে খুলে গিয়েছে। বিজেপির ঝড় চলছে বলছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
আরও পড়ুন: জলপাইগুড়ির প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে চাপে পড়ল নির্বাচন কমিশন, ডাকা হল জরুরি বৈঠক
এই বিপর্যয়ের পর মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আজ ফোন করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। বিপর্যয় নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা হয়েছে। এখানে সাতসকালে ছুটে এসেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এখানে এসেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার তুমুল ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। উড়ে গিয়েছে একের পর এক ঘরে চাল ও দোকানের টিনের শেড। ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছে প্রচুর গাছকে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সম্পত্তির। ঝড়ের দাপটে মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের। আহতও বহু। তাই রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজেপি নেতাদের তুলোধনা করে অভিষেকের বক্তব্য, ‘এখানের যাঁরা মায়েরা, দিদিরা, বৌদিরা ভোট দিয়েছিলেন তাঁরা দেখুন। কলকাতা থেকে ৬২০ কিমি দূরত্ব থাকলেও রাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে পৌঁছেছেন। সেখানে বালুরঘাট থেকে জলপাইগুড়ির দূরত্ব ৩০০ কিমি। চার ঘণ্টার রাস্তা। সুকান্ত মজুমদার রাতে আসতে পারতেন না? আপনি চাইলে ৯টার মধ্যে পৌঁছতে পারতেন। বিজেপির নেতারা রাজনীতি করছে। কোনও কাজ করেনি। গত পাঁচ বছরে কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে? হয়নি। দেখাতে পারবেন না। দিল্লি থেকে কোনও প্যাকেজ নিয়ে এসেছে? আচ্ছে দিনের নাম করে ভোট নিয়েছিল। আজ মানুষ বুঝতে পারছে। তাই ব্যালটে জবাব দেবেন তাঁরা।’