এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতিয়ার রাজ্যজুড়ে উন্নয়ন এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানো। সেই কাজ সব জেলায় হয়েছে বলেই দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–মন্ত্রীদের। সেখানে বিড়ি শ্রমিকদের সমস্যা এখনও মেটেনি বলে খবর। এই বিড়ি শ্রমিকদের মহল্লাতেই এবার এলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে কোনও কথা বললেন না মুখ্যমন্ত্রী। অথচ সাগরদিঘিতে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উপনির্বাচনের প্রচারে এসে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, এক মাসের মধ্যে বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়টি দেখতে দায়িত্ব দেন দলের দুই বিড়ি কোম্পানির মালিক তথা নেতা খলিলুর রহমান এবং জাকির হোসেনকে। এই খলিলুর রহমানই এবারও জঙ্গিপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। সমস্যা থেকেই গেল।
এদিকে অভিষেকের সভার পর কেটে গিয়েছে দেড় বছর। তারপরও বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি ১৭৮ টাকাতেই থেমে রয়েছে। বাড়ছে না মজুরি। তবে বাইরন বিশ্বাস কংগ্রেসের টিকিটে উপনির্বাচনে জিতে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতেই শ্রমিকরা আসা করেছিলেন এবার বোধহয় মজুরি বাড়ূবে। কিন্তু তা না হওয়ায় বিড়ি শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের দাদা সাজাহান বিশ্বাসও নির্বাচনে দাঁড়ান। তিনিও বিড়ি শিল্পপতি। বাইরনের বাবা বিড়ি শিল্পপতি বাবর বিশ্বাস এবার সমর্থন করছেন নির্দল প্রার্থী আসাদুল শেখকে। আসাদুল সম্পর্কে বাইরনের মামাতো ভাই।
আরও পড়ুন: এবার লোকাল ট্রেন থেকেও বেরল ধোঁয়া, আতঙ্কিত যাত্রীরা, তুলকালাম কাণ্ড ব্যান্ডেলে
অন্যদিকে মজুরি যখন বাড়ছে না তখন সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নিশ্চয়ই আশার আলো দেখাবে বলে মনে করেছিলেন সভায় থাকা বিড়ি শ্রমিকরা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের মজুরি নিয়ে কথা বলবেন এমনই আশা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে কোনও কথা বলেননি। বিড়ি মহল্লায় এসে বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে কোনও কথা না বলায় শ্রমিকরা হতাশ। এখানে ৬৭ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়ে কোনও কথা না বলার পিছনে আছে আদর্শ আচরণবিধি। এখন যদি কোনও প্রকল্প বা সহায়তার কথা মুখ্যমন্ত্রী বলেন তাহলে নির্বাচন কমিশনের কোপে পড়তে হবে।
এছাড়া লোকসভা নির্বাচনের পর এই বিষয়টি নিয়ে সমস্যা সমাধান করবেন বলে সূত্রের খবর। জঙ্গিপুরের এই লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন মুর্তোজা হোসেন। আর এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে ভোট টানতে চাইছে কংগ্রেস। আর তাই সংখ্যালঘু ভোটের বিভাজন ঠেকাতেই মুখ্যমন্ত্রী সুর চড়িয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। সুতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যতই জবরদস্তি করুক, এবার বিজেপি ২০০ আসনও পেরোবে না। আমাদের বাংলায় আমরাই একাই একশো। বিজেপির সঙ্গে যদি লড়তে হয় তবে তৃণমূলই হচ্ছে আসল শক্তি।’