প্রয়াত সংগীত শিল্পী পিলু ভট্টাচার্য। বেশ কিছুদিন ধরেই বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন খ্যতনামা এই শিল্পী। দিন কয়েক আগেই বাড়ি ফিরে ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই ফের বুকে ব্যথা শুরু হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
ছোটবেলা কাটিয়েছেন উত্তর কলকাতায়। পড়াশুনোর পাশাপাশি গানকে চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। প্রথম জীবনে কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়ে ধীরে ধীরে কিছুটা নাম অর্জন করেছিলেন। এরপর কেরিয়ারের শুরুতে অত্যন্ত পরিশ্রম করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ছবিতে একের পর এক হিট গান গেয়েছেন। বিশেষ করে প্যারোডি গান ও মজার গানের জন্য খ্যাত তিনি।
একসময় তিনি সিপিএমের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। বহুবার সিপিএমের মঞ্চে গান উঠে গান গেয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে অবশ্য বিজেপির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। সরাসরি পদ্ম শিবিরের রাজনৈতি মঞ্চে, কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অন্দরে প্রবেশ এবং সেখান থেকে অনুদান জোগাড় ও বিভিন্ন সময় লোকগানের উপর কাজ করেছেন তিনি।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন পিলু ভট্টাচার্য৷ একটা সময়ে বাম রাজনীতিতে যুক্ত থাকা পিলু ভট্টাচার্যের সঙ্গে পদ্ম শিবিরের নেতাদের যোগাযোগ বেড়ে ওঠে৷ বিধানসভা ভোটের সময় বেশ কিছু জায়গায় বিজেপির হয়ে প্রচারেও গিয়েছিলেন তিনি৷ তবে রাজনৈতিক রং দূরে সরিয়ে সুভাষ চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে কখনও দূরত্ব বজায় হয়নি তাঁর। গত ৩ অগস্টও সুভাষ চক্রবর্তীর পরিবারিক স্মরণ সভায় হাজির হয়েছিলেন প্রবাদপ্রতিম সংগীত শিল্পী।
একসময় হিট গানের পাশাপাশি নিজেই গান লিখতে শুরু করেন। তাঁর মৌলিক গানের অ্যালবাম রাতারাতি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ২০০৭ সালে তাঁর 'রাধামাধব' অ্যালবাম প্রচুর সমাদর পেয়েছে দর্শকদের কাছে। জলছবি, কান্দিয়া আকুল, চল যাই-এর মতো একাধিক হিট গান তৈরি করেছেন প্রবাদপ্রতিম এই সংগীত শিল্পী।
২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। গানের পাশাপাশি খেলাধুলোর প্রতি একটা তীব্র আকর্ষণ ছিল তাঁর। ২০১৯ সালে ভারতীয় দলের জন্য 'ইন্ডিয়া জিতেগা' গানটি গেয়েছিলেন। দিয়েগো মারাদোনার সামনে গান গেয়ে তাঁর প্রশংসা পেয়েছিলেন। সংগীত জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত এই শিল্পীর আকস্মিক প্রয়াণে৷