অভিনয় দুনিয়ায় এসেছিলেন 'খেলাঘর' সিরিয়ালের হাত ধরে। তারপর কাজ করেছেন 'মেয়েবেলা'র মতো চর্চিত ধারাবাহিকে। মাঝে TV-র দুনিয়া থেকে কয়েকমাসের বিরতি, তারপর আরও এবার ছোট পর্দায় ফিরছেন অভিনেত্রী স্বীকৃতি মজুমদার। সৌজন্যে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রযোজিত ধারাবাহিক ‘আলোর কোলে’। তার আগে Hindustan Times Bangla-র সঙ্গে খোলামেলা আড্ডা দিলেন ছোট পর্দার 'আলো' স্বীকৃতি।
‘আলোর কোলে’ শুরু হচ্ছে ২৭ নভেম্বর থেকে। গল্পটা ঠিক কেমন?
স্বীকৃতি: আলোর ঠিকানায় আমায় 'আলো'র চরিত্রে দেখা যাবে। যে থেকেও নেই, আবার না থেকেও আছে। তাই চরিত্রটা আমার কাছে খুবই চ্যালেঞ্জিং। ছোট মেয়েকে রেখে আলো মারা যায়। অথচ সে যেহেতু না থেকেও আছে, তাই মেয়ের দুঃখ-কষ্ট সবই বুঝতে পাচ্ছে। তবে নিজের মেয়েকে আগলে রাখতে পারছে না। এছাড়া এই ধারাবাহিকে একটা প্রেমের গল্পও আছে। কারণ, আলো তার বরকেও ছেড়ে গিয়েছে, তার সমস্যাও সে বোঝে। তাই আলো যেমন মেয়েকে মায়ের কোলটা ফিরিয়ে দিতে চায়। তেমনই সে এমন একজনকে খুঁজছে, যে তার জায়গা নিতে পারবে। এটা একটা আত্মত্যাগ ও ভালোবাসারও গল্প।
কেরিয়ারে পিকে থেকে সেকেন্ড লিড কেন বাছলেন?
স্বীকৃতি: আসলে 'আলো'র সেকেন্ড লিড কিনা সেটা এখনই বলা খুূব মুশকিল। কারণ ধারাবাহিকের নামF ‘আলোর কোলে’। তাই এখানে নায়িকা দুজনেই। একজন নেই, আরেকজন আছে। আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গল্পটা তবে রাধা (সমু) চরিত্রটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথম দিনের শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
স্বীকৃতি: বেশ ভালো (হাসি)। তবে চরিত্রটা বেশ কঠিন, চ্যালেঞ্জিং। শ্য়ুটিং শুরুর আগে থেকেই পরিচালক ওয়ার্কশপ করিয়েছেন। আমার মনে হয়না আর কোনও মেগায় ওয়ার্কশপ হয়েছে বলে। আর কোনও মেগা সিরিয়ালকে সেই সময়টাও দেওয়া হয় না। তবে আমাদের এমনই একটা গল্প, যেটা টেকনিক্যালি শ্যুট করাটাও বেশ কঠিন। কারণ, এখানে আমি মানুষ নই, অথচ মানুষের মতোই একটা বাড়িতে রয়েছি। কথাও বলে যাচ্ছি, তবে অন্যরা আমায় শুনতে পাচ্ছে না। এটা কঠিন, কারণ আমি যদি কথা বলে যাই অন্যরা সেটা এড়িয়ে রি-অ্যাক্ট না করে অভিনয় করছেন, সেটা সকলের জন্যই বেশ কঠিন।
কেরিয়ারের শীর্ষে থেকে এমন একটা ভূতের চরিত্র কেন বাছলেন?
স্বীকৃতি: কারণ, এটাই তো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সময়। এমন একটা চরিত্র লাইফ চেঞ্জিং হতে পারে। (হাসি)
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের প্রযোজনায় কাজ, কতটা বড় সুযোগ বলে মনে হয়?
স্বীকৃতি: সৌভাগ্রক্রমে আমি যে প্রোজেক্টগুলোই পেয়েছি সেগুলি সবই অন্যরকম। এটাও তেমন। আমি সত্য়ি কৃতজ্ঞ। আর এই টিমটাও বেশ ভালো। যাঁরা ক্যামেরার পিছনে আছেন. তাঁরাও সাপোর্ট দিচ্ছেন। আমরা পরিবারের মতোই কাজ করছি।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই কাজটা নিয়ে আলাদাকে করে কথা হয়েছে?
স্বীকৃতি: সকলের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলার সময় তো ওঁর মতো ব্যস্ত মানুষের (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) নেই। তবে যে টিম আছে, তাঁরা নিয়মিত ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই কাজ করছেন। তাতে যাঁদের যেটা নিয়ে কিছু সমস্যা আছে তাঁরা সেই উত্তরটা পেয়ে যাচ্ছেন। তবে হ্যাঁ, 'আলোর কোলে'র লঞ্চের দিন সকলের সঙ্গে দেখা করে উনি (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) 'অল দ্য বেস্ট' জানিয়েছেন।
খেলাঘর, মেয়েবেলা, তারপর 'আলোর কোলে' অভিনয় কেরিয়ারের শুরুটা কীভাবে হয়েছিল?
স্বীকৃতি: আমার বেড়ে ওঠা বেহালার পর্ণশ্রীতে। ব্যাকগ্রাউন্ডটা অবশ্য ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের। চাকরিও পেয়েছিলাম। তবে মাঝে একটা বিউটি কনটেস্টে নাম দি, সেকেন্ড হই। সেখান থেকেই সুযোগ এসেছিল। তখন চাকরি ছেড়ে অভিনয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কঠিন ছিল। তবে নিয়েছি। এখন অবশ্য এটা বেশ ভালোই লাগছে, আর অভিনয়টাই আমি করতে চাই।
ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে অভিনয়, বাড়িতে বাধা দেয় নি?
স্বীকৃতি: বাড়ির বড় সাপোর্ট ছিল। আমার থেকেও মায়ের ইচ্ছাই বেশি ছিল। আমার পরিবার বেশ আধুনিক। ওদের এটা মানতে অসুবিধা হয়নি।
সিরিয়াল ছাড়া আর কোনও মাধ্যমে কাজ করেছেন?
স্বীকৃতি: 'মেয়েবেলা'র পর মাঝে যখন ৩-৪ মাসের ব্রেক নিয়েছিলাম, তখন OTTতে কাজ করেছি। তবে সেটা নিয়ে এখনই কথা বলতে পারব না। সময় এলে নিশ্চয় বলব।
অভিনয় ছাড়া অবসর সময় কাটান কীভাবে?
স্বীকৃতি: ঘুমিয়ে আর টিভি দেখে (হাসি)
শ্যুটিং তো শুরু হয়েছে, 'আলোর'র ছোট্ট মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব হল?
স্বীকৃতি: হ্যাঁ, খুব ভালো বন্ডিং, ছোট্ট হলেও ও ট্যালেন্টেড, স্মার্ট। স্ক্রিপ্ট দিলে চট করে মুখস্থ করে ফেলে। শ্যুটিংয়ের সময় জায়গা, পজিশন সবই বোঝে বড়দের মতো। আর ও খুব মিষ্টি।
আজকাল বহু ধারাবাহিক TRP-র চক্করে দ্রুত শেষ হচ্ছে, তার জন্য টেনশন আছে?
স্বীকৃতি: একেবারেই নয়, যখন প্রযোজক হব, তখন এসব ভাবব।
ছোটপর্দা বাদ দিলে বড়পর্দায় পছন্দের অভিনেতা কারা?
অভিনেত্রী আলিয়া ভাট, অভিনেতাদের মধ্যে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী থেকে রণবীর কাপুর অনেকেই আছেন। আর বাংলায় অনির্বাণ ভট্টাচার্য, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়।