২০২৩-এর ৬ জানুয়ারি, সমাজবাদী পার্টির নেতা ফাহাদ আহমেদকে বিয়ে করে সকলকে চমকে দিয়েছিলেন স্বরা ভাস্কর। এরপর বিয়ের ৬ মাসের মাথায় বাবা-মাও হয়ে যান স্বরা-ফাহাদ। যদিও ভিন ধর্মে স্বরার বিয়ে নিয়েও কিছু কট্টরপন্থীরা কথা বলতে ছাড়েননি। স্বরা-ফাহাদের বিয়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুসলিম জামাতের প্রধান মৌলনা। তবে যে যাই বলুন, বিয়ের পর থেকে সুখেই ঘরকন্যা করছেন স্বরা-ফাহাদ।
জানা যায়, স্বরা-ফাহাদের আলাপ হয়েছিল মুম্বইয়ের এক প্রতিবাদ মিছিলে। তবে এই দুজনের প্রেমের পুরোটাতেই বিশেষ জায়গা জুড়ে রয়েছে দিল্লি। স্বরা-ফাহাদ কোথায় ডেট করতেন জানেন? দিল্লির সুন্দর নার্সারিতে। মুঘল আমলে যার নাম ছিল আজিমবাগ। হুমায়ুনের সমাধির দোরগোড়া থেকে আজিমবাগের ভিতর দিয়েই ষোড়শ শতাব্দির আজিমগঞ্জ সরাইতে রাস্তা গিয়েছিল। আজিমবাগের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ১৫টি মুঘল স্থাপত্য। ব্রিটিশরা এসে এই বাগানের একটা অংশে নার্সারি করেন, তখন থেকেই নাম হয় সুন্দর নার্সারি। আর এটাই ছিল স্বরা-ফাহাদের ডেটিং করার জায়গা।
এরপর এই দম্পতির বিয়েও হয় দিল্লির সৈনিক ফার্মসে। সেখানে স্বরার দিদার বাড়িতে আয়োজিত হয় তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠান। এরপরে আসে স্বরা-ফাহাদের প্রথম সন্তান, তাঁদের মেয়েরও জন্ম হয়েছে দিল্লিতেই। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এবিষয়েই মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর।
স্বরা বলেন, 'দিল্লি সেই জায়গা যেখানে আমি নিজের জীবনের জন্য একজন নির্ভরযোগ্য লোককে খুঁজে পেয়েছিলাম, যাঁকে আমি বিশ্বাস করতে পারি। সেটা ছিল ২০২০-র ভ্যালেন্টাইনস ডে-র আগের ঘটনা। আমরা মাই ভ্যালেন্টাইন ইভেন্টের জন্য কাজ করছিল। ওই অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের চাঁদা তুলতে হত। আমাদের লোকজন মাত্র ২০০০-৩০০০ টাকার বেশি কেউ দিচ্ছিল না। তবে একদিন, ফাহাদ মাঝরাতে মুম্বই থেকে এলো এবং ও আমার বাড়িতে এসে আমাকে ৫০,০০০ টাকা দিয়েছিল। ও বলেছিন যে ও এটা আমাদের ইভেন্টের জন্য সংগ্রহ করেছে। এই বিষয়টা আমার মন ছুঁয়ে যায়, কারণ এটা এমন কিছু ছিল যা ও স্বেচ্ছায় দিয়েছিল। বিষয়টা আসলে টাকা নয়, ও যে প্রচেষ্টা করেছিল, সে সম্পর্কে বলছি। আমি সেদিনই বুঝতে পেরেছিলাম যে ও এমন একজন ব্যক্তি যাঁর উপর আমি নির্ভর করতে পারি। যে কাজটা করা আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। এরপরই আমি ওর সঙ্গে ডেট করা শুরু করি। তখন একদিন ও দিল্লিতে এসে আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করে, তাই এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ছিল।'
স্বরার কথায় ফাহাদ বলেন, 'যখন আমরা মুম্বইতে ডেটিং করতাম, আমরা একবার বা দুবার রেস্তোরাঁয় গিয়েছি। তবে শুধুমাত্র দিল্লিতেই আমরা একে অপরের পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করেছি। আমরা সুন্দর নার্সারিতেও গিয়েছিলাম, এটাই ছিল আমাদের প্রথম আউটিং, পিকনিক এবং ডেট। মুম্বাই মে পেয়ার ফার্স্ট গিয়ার মে থা, দিল্লি মে ফোর্থ গিয়ার মে ডালকে হুমনে চিজে জলদি-জলদি কর দি। তাই, আমাদের হৃদয়ে দিল্লি একটা বিশেষ জায়গা।'
ফাহাদের কথায়, ‘আমরা মুম্বইতে থাকলে স্বরা বেশিরভাগ বাড়িতেই থাকত, তবে দিল্লিতে আমরা বাইরে বেড়াতে বের হয়েছি। ওই শহরের আমাদের আসলে ডেট করা শুরু। খান মার্কেটও আমাদের খুব প্রিয় জায়গা।’