ভাবা যায়। হস্টেলের নানা অব্যবস্থা সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে অন্তত ১৭ কিমি পথ হাঁটলেন ৬০জন ছাত্রী। একেবারে রাতের অন্ধকারে একলা রাস্তায় তাঁরা হাঁটা শুরু করেন। ঝাড়খন্ডের ঘটনা। ঝাড়খন্ডের পশ্চিম সিংভূমের জেলা শাসকের কাছে নালিশ জানানোর জন্যই তারা এভাবে রাতের অন্ধকারে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন বলে খবর। হস্টেলের ওয়ার্ডেন তাদের অত্য়াচার করছে এটা জানানোর জন্যই তারা বেরিয়ে পড়়েছিলেন। তবে তাদের এই উদ্যোগে নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষাদফতর।
তারা সকলেই একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। সারারাত পথ হেঁটে সকাল ৭টা নাগাদ তারা জেলাশাসকের অফিসের কাছে আসে। তারা ডেপুটি কমিশনার অনন্যা মিত্তালের কাছে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। এমপিকেও ফোন করেন তারা।
এদিকে এভাবে ছাত্রীদের আসার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের অন্দরে শোরগোল পড়ে যায়। ডিসির নির্দেশে নড়েচড়ে বসে শিক্ষা দফতর। জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছে খবর যায়। তাঁরাও ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর তাঁরা ছাত্রীদের অভিযোগগুলি শোনেন। কোথায় সমস্য়া হয়েছে তা জানার চেষ্টা করেন। এরপর গাড়িকে করে তাদের ফের হস্টেলে ফেরানোর ব্যবস্থা তারা করেন।
এদিকে শিক্ষা দফতর জানিয়েছে ওদের অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ওয়ার্ডেনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রীদের অভিযোগ, তাদের পচা খাবার দেওয়া হয়। শৌচাগার পরিষ্কার করতে বলে। নীচু ক্লাসের ছাত্রীদের মেঝেতে মাদুর পেতে শুতে বলা হয়। প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্য়ে তাদের এভাবে শুতে হয়। প্রতিবাদ করলেই জোটে বেধড়ক মার।
এর সঙ্গেই তারা অভিযোগ তুলেছে সম্প্রতি আধিকারিকরা স্কুলে এসেছিলেন। কিন্তু তখন ওয়ার্ডেন চাপ দিয়েছিলেন যে সত্যি কথা বলা যাবে না। মিথ্যে বলতে হবে। সেকারণেই তারা বাইরে কোনও কথা বলতে পারতেন না। তবে এবার তাদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। চাইবাসাতে পৌঁছনর পরে তারা স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদকেও ফোন করে। এদিকে ছাত্রীদের ফোন পেয়ে তিনি দ্রুত জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেন।
এরপর ডিসি গোটা ঘটনা জেলা শিক্ষাদফতরকে জানায়। এদিকে গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি তৈরির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা শিক্ষা দফতরও এনিয়ে খোঁজখবর করছে। কেন তাদের সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার করা হত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওয়ার্ডেনের সঙ্গেও কথা বলা হবে। কেন তিনি ছাত্রীদের সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহার করতেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।