সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে বেড়েছে সাইবার ক্রাইম। অনলাইনের ব্যবহার যত বাড়ছে ততই সাইবার প্রতারণাও বেড়ে চলেছে। কখনও ঋণ পাইয়ে দেওয়ার নামে, কখনও বা টিকিট বুকিংয়ের নামে আবার প্যান কার্ড আপডেট করার নামে সাইবার প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বহু মানুষ। যার ফলে প্রচুর টাকা খোয়াছেন অনেকেই। আর এবার সাইবার প্রতারণার শিকার হলেন এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। আর্থিক সমস্যার জেরে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন ওই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। কিন্তু, কিডনি বিক্রি করতে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে খোয়ালেন ৬ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। ঘটনাটি বেঙ্গালুরুর।
আরও পড়ুনঃ 'সরকারি নার্সিং কোর্সে ভরতি করিয়ে দেব', ১.৮ লাখ টাকা গায়েব কলেজ পড়ুয়ার থেকে
জানা গিয়েছে, প্রচন্ড আর্থিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন ওই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট । তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন একটি কিডনি বিক্রি করে দেবেন। এরপর ইন্টারনেটে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এই ধরনের একটি সংস্থার খোঁজ পান তিনি। পরে https://kidneysuperspecialist.org নামের একটি ওয়েবসাইটে ক্লিক করে তিনি একটি ফোন নম্বর (৯৬৩১৬৮৮৭৭৩) পান। সেই নম্বরে ফোন করলে একজন ওই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করতে বলে। পরে ওই যুবক নাম, বয়স, ঠিকানা এবং রক্তের গ্রুপ হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেন।
এরপর প্রতারকরা জানায়, একটি কিডনির জন্য ২ কোটি টাকা দেওয়া হবে। যার অর্ধেক আগে দেওয়া হবে। তাতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন ওই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। এরপর তাকে গ্রহীতার নাম, পরিচয়পত্র এবং একটি ইমেল আইডি পাঠানো হয়। তবে তাকে জানানো হয়, এনওসি এবং রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ৮০০০ টাকা দিতে হবে। সেই টাকা দিয়ে দেন তিনি। পরে একটি কোড কেনার জন্য ২০ হাজার টাকা দিতে বলা হয়। সেই টাকাও দিয়ে দেন। পরে আরও ৮৫ হাজার টাকা চাওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, গত ২ মার্চ তার অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তরের জন্য ৫ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়েছিল। সে মতো ৫ লক্ষ টাকাও তিনি দিয়ে দিয়েছিলেন।
এরপরে ঘটে বিপত্তি। এক মহিলা ওই চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে ফোন করে নিজেকে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার একজন কর্মী বলে দাবি করেন। তিনি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাছ থেকে আরও ৭.৬ লক্ষ টাকা দাবি করেন। এর জন্য ইমেইলে একটি ফর্ম পাঠানো হয় যুবককে। এরপর তিনি অফিসের বস এবং বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন তিনি প্রতারণা ফাঁদে পা দিয়েছেন। ঘটনায় দেরি না করে তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যুবক জানান, টাকার বিনিময়ে অপরিচিতদের কাছে কিডনি বিক্রি করা বেআইনি তা তিনি জানতেন না। এই ঘটনায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।