শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারির সিংহীর নাম সীতা রাখা নিয়ে আপত্তি তুলে আদালতে গিয়েছিল হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। এবার কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য জানিয়েছেন সিংহীর নাম সীতা আর সিংহের নাম আকবর এটা ঠিক যুক্তিতে মিলছে না। খবর হিন্দুস্তান টাইমস সূত্রে।
তবে রাজ্য সরকার জানিয়েছে তারা ওই দুটির নাম বদলানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই নাম নিয়ে আমার যুক্তি আপনাদের সঙ্গে মিলছে না। এই নাম এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এনিয়ে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়া দরকার। একটি সিংহের নাম কি সম্রাট অশোক রাখবেন? এটা শুধু সীতার ব্যাপার নয়। আমি সিংহের নাম আকবর রাখার পক্ষপাতী নই। তিনিও দক্ষ, সফল ও ধর্মনিরপেক্ষ মুঘল সম্রাট ছিলেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিতর্ক আনার জন্য কে এসব নাম রেখেছেন? কোনও জন্তুর নাম ভগবান, পৌরানিক নায়ক, স্বাধীনতা সংগ্রামী বা নোবেল প্রাপকদের নামে রাখা যায় কি না। আমি তো এতে অবাক। কোনও সিংহের নাম কি রামকৃষ্ণ বা বিবেকানন্দ রাখবেন? কেন সিংহ আর সিংহীর নাম আকবর আর সীতা রেখে বিতর্ক বৃদ্ধি করলেন?
এদিকে অ্য়াডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়জিৎ চৌধুরী আদালতে জানিয়েছেন, ত্রিপুরা থেকে আনা হয়েছে এই দুটি জন্তুকে। সেখানেই এই নাম রাখা হয়েছিল। তবে বেঙ্গল সাফারি কর্তৃপক্ষ সেই নাম বদল করবে।
তিনি আদালতে জানিয়েছেন, আমাদের রাজ্য এই বিতর্ক চায় না। ত্রিপুরা এই নাম রেখেছিল। আমরা ভাবছি এটার অন্য নাম রাখব। আদালত জানিয়েছেন, আমাদের রাজ্য়ে তো নানা বিতর্ক। শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও নানা বিতর্ক রয়েছে। তার মধ্য়ে আবার সিংহের নাম নিয়ে বিতর্ক তুললেন কেন?
এদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ বনশল জানিয়েছেন, দুই কর্তৃপক্ষই বলছে তারা সিংহের নামকরণ করেনি। তবে আদালত জানিয়েছে এই ধরনের নামকরণের দরকার নেই।
ত্রিপুরা থেকে এসেছে একটি সিংহ ও অপরটি সিংহী। শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে এসেছে সেই এক জোড়া সিংহ। সিংহের নাম আকবর। আর সিংহীর নাম সীতা। আর তারপরই একেবারে হইহই ব্যাপার। তীব্র আপত্তি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের। সিংহীর নাম কেন সীতা রাখা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলাও হয়েছে।
ত্রিপুরার বিশালগড়ে অবস্থিত সিপাহিজলা জুলজিকাল পার্ক থেকে একজোড়া সিংহ এসেছে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে। পশু বিনিময়ের অঙ্গ হিসাবে এই সিংহ এসেছে শিলিগুড়িতে।