বিধানসভায় তখন ‘জয়শ্রীরাম’, ‘ভারত মাতা কি জয়’ ধ্বনি। আর তারই মাঝে বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডে পাশ হয়ে গেল অভিন্ন দেওয়ান বিধি বিল। দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসাবে উত্তরাখণ্ডে পাশ হল এই অভিন্ন দেওয়ান বিধি বিল। এবার এই পাশ হওয়া বিলে সেরাজ্যের রাজ্যপালের স্বাক্ষর এলেই, তা উত্তরাখণ্ডে আইনে পরিণত হবে। লোকসভা ভোটের আগেই, একদেশ, এক ভোট, এক আইন নিয়ে চর্চা ছিল। এবার একদেশ, এক আইন ইস্যুতে আরও এক ধাপ এগোলো উত্তরাখণ্ড।
উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় ২০২৪ অভিন্ন দেওয়ান বিধি বিল পাশ হয়েছে। ৩৯২ টি ধারা সম্বলিত এই বিলে রয়েছে ৪ টি ভাগ। সাতটি অধ্যায়। এদিন বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় ধ্বনি ভোটে এই বিল পাশ হয়। বিল পাশের সময় কক্ষে শোনা যায় ‘জয় শ্রীরাম’, ‘ভারত মাতা কি জয়’ ধ্বনি। এই বিল ঘিরে কংগ্রেসের অবস্থান ছিল বেশ কৌশলী। কংগ্রেস জানিয়েছে, তারা এই বিলের বিরোধী নয়। তবে বিলকে প্রথমে সিলক্ট কমিটির কাছে পাঠানোর সপক্ষে তারা। তারপর কমিটি এক মাসের মধ্যে বিলটি নিয়ে রিপোর্ট দিলে তা পাশ করা উচিত। বিরোধী দলের নেতা যশপাল আর্য বলেন, অনেক বিষয় আছে, যার মধ্যে অনেকগুলোই অস্পষ্ট, যেগুলো আগে দেখা দরকার। আর্য এবং বিএসপি বিধায়ক শাহজাদও এই বিষয়ে একটি সংশোধনী উত্থাপন করেছিলেন, যা হাউস দ্বারা বিবেচনা করা হয়নি। এদিকে, আগেই উত্তরাখণ্ড বিধানসভার অনুমোদন পেয়েছিল অভিন্ন দেওয়ান বিধি বিল। তাার আগে অভিন্ন দেওয়ান বিধি বিলের খসরা পাঠানো হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জনা দেশাইয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিটির কাছে। কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ করেছিল। সব সুপারিশ গ্রহণ করার পরই উত্তরাখণ্ডে পুষ্কর সিং ধামির মন্ত্রিসভা রবিবার বিলে সবুজ সংকেত দেয়। এদিকে, তারপরই বুধবার এই বিল পাশ হয়।
দেবভূমি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বিলটিকে গঙ্গার সঙ্গে তুলনা টেনে বলেন, ‘এই বিলটি সকলের জন্য একটি পথ দেখাবে, গঙ্গার মতো… যে নদী এরাজ্য থেকে প্রবাহিত হয়, সারা ভারতের মানুষকে আশীর্বাদ করে। একইভাবে UCC-এর গঙ্গা সব মানুষের উপকারে আসবে।’ এদিকে, বিজেপির জন্য এই বিল পাশ ২০২২ ভোটে প্রতিশ্রুতি পালনের শামিল। সেই সূত্র ধরে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেন, ‘ আমরা রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ান বিধি (ইউসিসি) বাস্তবায়ন করব। আমরা ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে ইউসিসির জন্য একটি কমিটি গঠন করি। এটি দেবতাদের পবিত্র ভূমি, গঙ্গা এবং যমুনার ভূমি, এটি দেশের সৈনিকদের রাজ্য। তাই, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে উত্তরাখণ্ডে বসবাসকারী প্রত্যেকের জন্য আমরা ইউসিসি আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’