সেরে ওঠার পরে ফের কোভিড সংক্রমণের শিকার হলেন আমেরিকার এক রোগী। প্রথম বারের চেয়েও মারাত্মক উপসর্গ দেখা দিল দ্বিতীয় বারের সংক্রমণে।
ফুসফুস থেকে শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে অক্সিজেনের জোগান না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে ভরতি করতে হয় বছর পঁচিশের ওই যুবককে। কয়েক দিনের চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ওই রোগী। তবে এর জেরে প্রশ্ন উঠেছে, Covid-19 রোধ করার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক কতটা থাকা প্রয়োজন শরীরে?
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নেভাডাবাসী ওই যুবকের এর আগে বিশেষ কোনও শারীরিক সমস্যা বা জটিল অসুখ ছিল না যার জেরে তিনি কোভিড সংক্রমণের শিকার হয়েছেন।
জানা গিয়েছে, গত ২৫ মার্চ ওই যুবকের গলা জ্বালা, মাথ্যাব্যথা, বমি ভাব ও ডায়েরিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। ১৮ এপ্রিল প্রথম বার তিনি কোভিড পজিটিভ পরীক্ষিত হন। ২৭ এপ্রিল প্রাথমিক সমস্ত উপসর্গ দূর হলে তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। এর পর ৯ ও ২৬ মে-র পরীক্ষায় তিনি কোভিড নেগেটিভ প্রমাণিত হন। ২৮ মে ফের যুবকের শরীরে কোভিড সংক্রমণজনিত উপসর্গ দেখা দেয়। এবার মাথাব্যথা, বমি ভাব ও ডায়েরিয়ার সঙ্গে দেখা দেয় জ্বর, কাশি ও মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ। ৫ জুনের পরীক্ষায় ফের কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে।দ্বিতীয় বার সংক্রমিত হলে তাঁর রক্তে অক্সিজেনের অভাবে তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
বিজ্ঞানীদের দাবি, ওই যুবক দ্বিতীয় বার কোভিড সংক্রমণের শিকার হওয়ার চেয়েও আসলে প্রথম বারের সংক্রমণ প্রকট ছিল না বলে পরে তা দ্বিগুণ হয়ে ফিরে এসেছে।
নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মার্ক প্যান্ডোরির মতে, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আগের সংক্রমণ যে শরীরে মজবুত প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করবে, এই তত্ত্ব সঠিক না-ও হতে পারে। কোভিডের বিরুদ্ধে শারীরিক প্রতিরোধের বিষয়টি বুঝতে এই কেসটি গুরুত্বপূর্ণ।’
তাঁর পরামর্শ, কোভিড সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরেও রোগীকে হাত ধোওয়া, ফেসমাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
প্রশ্ন উঠেছে, কোভিড আক্রান্তরা সকলেই, বিশেষ করে যাঁদের মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাঁরা সেরে ওঠার পরে শরীরে ঠিক কত পরিমাণ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়? সেই সুরক্ষা কত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়?
এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজতে নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে অতিমারীর সুদুর প্রসারী প্রভাব ও গোষ্ঠী প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য প্রশ্নগুলির উত্তর জানা জরুরি, দাবি বিজ্ঞানীদের।
এখনও পর্যন্ত দ্বিতীয় বার করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার হওয়ার ঘটনা যথেষ্ট বিরল। হংকং, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডস থেকে পাওয়া রিপোর্ট বলছে, ওই সমস্ত দেশে প্রথম কোভিড সংক্রমণ ঢেউয়ের পরে হালে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ইকুয়েডরে এক রোগী দ্বিতীয় বার সংক্রমিত হয়েছেন হুবহু নেভাডার যুবকের মতো উপসর্গ নিয়ে। আশা করা যাচ্ছে, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ এলে বিষয়গুলি আরও পরিষ্কার জানা যাবে।