২০২০ সালের টাইম’স ১০০ সেরা আবিষ্কার পুরস্কার পেল দিল্লির এমআইটি স্নাতক অর্ণব কাপুরের তৈরি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সংবলিত ‘মাইন্ড-রিডিং’ হেডসেট।
এমআইটি-র পোস্ট ডক্টরাল বছর পঁচিশেকের পড়ুয়া অর্ণব তাঁর ভাই শ্রেয়স ও সহ-গবেষকদের সঙ্গে এমআইটি মিডিয়া ল্যাব-এ ডিজাইন করেছেন ‘অলটারইগো’ নামের এই পরীক্ষামূলক হেডসেট।
তিনি জানিয়েছেন, সেরিব্রাল প্যালসি অথবা এএলএস-এর মতো যোগাযোগ সমস্যাজনিত রোগে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের সহায়ক হয়ে উঠবে এই হেডসেট। এর সাহায্যে তাঁরা কোনও কথা না বলে কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন অনায়াসে। শুধুমাত্র চিন্তার মাধ্যমেই তাঁরা এই হেডসেটের মাধ্যমে কম্পিউটারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবেন।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, আজ বৃষ্টি হবে কি না জানতে হলে এই হেডসেট ব্যবহার করে কম্পিউটারের সাহায্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই সংক্রান্ত তথ্য জেনে নেওয়া যাবে মাথার মধ্যে প্রশ্নটি শুধু সাজিয়ে নিতে পারলেই। হেডসেটে থাকা সেন্সর ব্যবহারকারীর মুখ ও স্বরনালির পেশি থেকে সংকেত পড়ে নিয়ে কম্পিউটারে পাঠাবে। এর পর বিশেষ ‘বোন কন্ডাকশন’ স্পিকারের সাহায্যে সঠিক উত্তরটি শুনতে পাবেন প্রশ্নকর্তা। অর্ণবের তৈরি হেডসেট মানুষের মন পড়ার ব্যাপারে ৯২% নিখুঁত।
মূল ধারণাটি হল, মুখে কিছু না বললেও অনেক সময়ে মানুষের মনে অনেক চিন্তা খেলা করে এবং উচ্চারণ না করলেও বন্ধ মুখের ভিতরে সেই কথাগুলিতে জিভের স্বল্প হলেও নড়াচড়া ঘটায়। বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে একটি স্মার্ট টিভি কাজে লাগিয়ে নিজের সেই জিভের স্পন্দনে ফুটে ওঠা অনুচ্চারিত কথার ছবি তুলে ধরেছেন অর্ণব।
সদ্য আবিষ্কৃত হেডসেট সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, কথা বলার সমস্যায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এই হেটসেট অত্যন্ত সহায়ক হয়ে উঠবে। বাকশক্তির অভাব ঘোচাতে এই যন্ত্র হয়ে উঠবে একজন মানুষের বিকল্প সত্তা, বলছেন তরুণ প্রযুক্তিবিদ।