লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমলে ফ্যাটি লিভারের রোগ হয়। অ্যালকোহল সেবনকারীদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়। তবে গত কয়েক দশকে, নন -অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের (এনএএফএলডি) কেসও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রধান কারণ খারাপ খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়মিত দৈনন্দিন জীবন।
এপিডেমিওলজিক্যাল সমীক্ষা বলছে যে ভারতে সাধারণ জনসংখ্যার প্রায় ৯% থেকে ৩২% নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত। ফলে এটি মোটেও হেলাফেলা করার মতো জিনিস নয়। যাঁদের ওজন বেশি, ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগ দুই প্রকার। প্রথমটি হল সাধারণ ফ্যাটি লিভারের রোগ। অর্থাত্ লিভারে চর্বি আছে কিন্তু লিভারের কোষের কোনও প্রদাহ বা ক্ষতি হয়নি। নন-অ্যালকোহলিক স্টিটোহেপাটাইটিস বা এনএএসএইচ-এ লিভারের কোষের প্রদাহ বা ক্ষতি হতে পারে এবং এটি ফাইব্রোসিস এবং সিরোসিস এমনকি লিভার ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে।
শরীরে উচ্চ কোলেস্টেরল, স্থূলতা, রক্তে শর্করার উচ্চ মাত্রা, ট্রাইগ্লিসারাইডের উচ্চ মাত্রা, মেটাবলিক সিন্ড্রোম, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম এবং স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো কারণে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের রোগ হতে পারে।
১. নন-ভেজ, গ্লুটেন এবং দুগ্ধজাত খাবার কম খান
এই খাবারগুলি হজম করা কঠিন। তাই এগুলি এড়িয়ে চলাই ভাল। লিভারের স্বাস্থ্য খারাপ থাকলে কাঁচা খাবারও এড়িয়ে চলা উচিত। একইভাবে ডিপ ফ্রায়েড, প্যাকেটজাত এবং চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। ডাঃ ভাবসারের মতে, সহজে হজমযোগ্য খাবার যেমন বাজর, রান্না করা শাকসবজি, ভাত এবং চাল-বাজরা ভিত্তিক খাবার খান। অতিরিক্ত তেলমশলা নৈব নৈব চ।
২. অ্যালকোহল এবং ক্যাফিন বন্ধ করুন
বলাই বাহুল্য, লিভারের রোগ মানেই আগে অ্যালকোহল ছাড়ুন। সমস্যা হলে চিকিত্সকের সাহায্য নিন। সেই সঙ্গে কফি, কড়া চায়ের নেশা থাকলে, সেটাও বন্ধ করুন।
৩. পর্যাপ্ত জল খান
অনেকেই বিশেষ দিনে অ্যালকোহল পান করেন। মনে হতেই পারে যে অ্যালকোহল তো জল মিশিয়ে খাচ্ছেন। কিন্তু এটি আপনার শরীরে জলের আরও অভাব তৈরি করে। ফলে অ্যালকোহল পান করলে অবশ্যই তার দ্বিগুণ জল খান। এতে শরীর খারাপ, হ্যাংওভারও কম হবে।
লিভার খারাপ থাকলে তো অবশ্যই রোজ পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে।
৪. সময়ে খাবার খান
অনেকক্ষণ গ্যাপ দিয়ে, গভীর রাতে খাওয়া ইত্যাদি অভ্যাস ছাড়ুন। ব্যস্ততা থাকলে বাড়ি থেকে খাবার ক্যারি করুন।
৫. ঘুম ঠিকঠাক হয় যেন
প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুমিয়ে দেখুন। পার্থক্য নিজেই টের পাবেন। সময়ের আগেই শুয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। এই সময়ে ফোন দূরে রাখলে দ্রুত ঘুমোতে সুবিধা হবে।
এটি আপনার হজমশক্তি বৃদ্ধি করবে, হরমোনের ভারসাম্যে সাহায্য করবে, ওজন কমাতে/ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে, স্ট্রেস কমাবে (কর্টিসল কমিয়ে), এবং ঘ্রেলিন-লেপটিন নিঃসরণ (ক্ষুধা-তৃপ্তি হরমোন) করবে, যা যকৃতের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।