ভারতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতেই যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরি করতে চায় ফ্রান্স। উল্লেখ্য, বাস্তিল দিবস উপলক্ষে দু'দিনের প্যারিস সফরে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সেই সফরের আগেই এই প্রস্তাব দেওয়া হল ফরাসি সরকারের তরফে। যদিও এই নিয়ে এখনও কোনও বাক্য ব্যয় করেনি ভারত সরকার। সম্প্রতি মোদীর মার্কিন সফরের সময় জিই-৪১৪ ইঞ্জিন সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছিল ভারতের। আর এবার ভারতের সঙ্গে মিলে যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরি করতে আগ্রহ প্রকাশ ফ্রান্সের। এর জন্য ফরাসি সংস্থা 'স্যাফরান'-কে সবুজ সংকেত দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
এদিকে আমেরিকার সঙ্গে ইঞ্জিন সংক্রান্ত চুক্তির জেরে ফ্রান্সের স্যাফরনের সঙ্গে চুক্তি বাধা প্রাপ্ত হবে না তো? উল্লেখ্য, নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে আমেরিকা 'ইন্টারন্যাশনাল ট্র্যাফিক ইন আর্মস রেগুলেশন'-এর নীতি অনুযায়ী চলে। এই নীতি অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি থাকলে অন্য দেশের সাথে এমন কোনও অস্ত্র চুক্তি করা যাবে না যাতে আমেরিকার ক্ষতি হবে বা তাদের স্বার্থ রক্ষা হবে না। যদিও সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মার্কিন এই নীতিকে পাশ কাটিয়েই ফ্রান্সের সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে ভারত। এদিকে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আমেরিকার সঙ্গে জিই-৪১৪ ইঞ্জিন সংক্রান্তর থেকে অনেকটাই এগিয়ে ফ্রান্সের এই প্রস্তাব।
ম্যাক্রোঁ প্রশাসনের প্রস্তাব, ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরি করতে চায় তারা। প্রস্তাবিত ১১০ কিলো নিউটন ইঞ্জিনটি সম্পূর্ণরূপে ভারতে তৈরি হবে। এর জন্য যে প্রযুক্তি প্রয়োজন পড়বে তা দেবে 'স্যাফরান'। এই ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে 'অ্যাডভান্সড মাল্টি রোল কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট'-এ। এদিকে সম্প্রতি ডিআরডিও প্রধান সমীর ভি কামাত ইতিমধ্যেই প্যারিসে স্যাফরান ইঞ্জিন ফ্যাক্টরিতে গিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ১৪ জুলাই বাস্তিল দিবস। সেই অনুষ্ঠানে 'প্রধান অতিথি' হিসেবে আমন্ত্রিত মোদী। এই আবহে দু'দিনের সফরে প্যারিস যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ১৩ জুলাই প্যারিসে পৌঁছেবেন তিনি। সেদিনই ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে পারে মোদীর। সেই বৈঠকেই নাকি এই ইঞ্জিন তৈরির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের। এদিকে জানা গিয়েছে, ভারতে গ্যাস টারবাইন তৈরির সেন্টার খুলতেও আগ্রহী ফরাসি সংস্থা স্যাফরান। উল্লেখ্য, এবছরই ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত অংশীদারিত্বের ২৫ বছর পূরণ হয়েছে। এর আগে ফ্রান্সের থেকে রাফাল যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে অনেক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কিনেছে ভারত। এই আবহে যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরির চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তা এই দুই দেশের বন্ধুত্বে নয়া মাইলফলক হবে।