২০২০ সালের জুন মাস। গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের বাহিনীর মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ। সেই সংঘর্ষের ঘটনা তিন বছর পেরিয়ে গেল। বৃহস্পতিবার সেই তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে শহিদ ভারতীয় জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
‘আজ আমরা সেই বীর সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি যাঁরা গালওয়ার উপত্যকায় আমাদের দেশকে রক্ষার জন্য় আত্মবলিদান দিয়েছিলেন। তাঁদের সাহসিকতা, আত্মত্যাগ আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দেবে।’ টুইট করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
১৫ জুন ২০২০ সাল। গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের সেনাদের মধ্য়ে মুখোমুখি সংঘর্ষ। সেদিন শহিদ হয়েছিলেন ২০জন সেনা জওয়ান। তারপর থেকেই পূর্ব লাদাখের সীমান্তে নানা অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল।
এদিকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চিনের তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয়, চিনের পাঁচজন মিলিটারি অফিসার মারা গিয়েছিলেন সেই সংঘর্ষে। তবে বাস্তবে মনে করা হয় আরও অনেকে চিনের তরফে সেদিন মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা তারা প্রকাশ্যে আনেননি।
এদিকে সেই সংঘর্ষের পর থেকে সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দফায় দফায় দুপক্ষের মধ্য়ে সেনা পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি এখনও।
এদিকে সীমান্ত ব্যবস্থাকে আরও সুরক্ষিত করার জন্য় নানা ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত। সমস্ত আবহাওয়া ও সমস্ত প্রতিকূল ভূভাগে চলতে পারে এমন যানবাহন আনা হয়েছে। নজরদারির জন্য নানা ধরণের অত্য়াধুনিক সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত সেনা পর্যায়ে ১৮ বার উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্র রেখার দুই প্রান্ত থেকে উভয় দেশই সেনার বহর কিছুটা সরিয়ে নিয়েছে।
এদিকে গত ২৩ এপ্রিল ১৮ তম বৈঠক হয় দুপক্ষের মধ্য়ে। সেখানে মূলত পূর্ব লাদাখে যে ইস্যুগুলি এখনও থেকে গিয়েছে সেগুলিকে দ্রুত মিটিয়ে ফেলার ব্যাপারে কথাবার্তা হয়েছে। মোটের উপর সীমান্তের পরিস্থিতি যাতে বিগড়ে না যায় সেকারণে যাবতীয় আলোচনা করা হয়েছে দফায় দফায়।
এদিকে ভারতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে,সীমান্তে শান্তি না ফিরলে দু দেশের মধ্য়ে বন্ধন কোনওদিন স্বাভাবিক হবে না। গত ৮ জুন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, পূর্ব লাদাখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ভারত ও চিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।
সেই গালওয়ানের ঘটনা তিন বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। এখনও অনেকের স্মৃতিতে টাটকা সেদিন কীভাবে দেশরক্ষায় এগিয়ে এসেছিলেন ভারতীয় জওয়ানরা।