উড়ান শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় ৬২ জন আরোহী নিয়ে ভেঙে পড়ল বিমান। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ২.৪০ মিনিটে শ্রীবিজয়া এয়ারলাইন্সের বিমানটির সঙ্গে রেডার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর পর বোয়িং ৭৩৭ বিমানটি সমুদ্রে ভেঙে পড়ে বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকার। বিমানের যাত্রীদের মধ্যে ১০টি শিশু ছিল।
এদিন ৫৬ জন যাত্রী ও ৬ জন বিমানকর্মী নিয়ে জাকার্তা থেকে পোনটিয়ানাকের উদ্দেশ্যে ওড়ে বিমানটি। বিমানটিকে ২৯,০০০ ফুট উচ্চতায় ওড়ার অনুমতি দেয় এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল। কিন্তু ১০,৮০০ ফুট উচ্চতায় উচ্চতায় ওঠার পর সেটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর পর তল্লাশি শুরু হলে জানা যায় জাকার্তার সিওকার্নো হাত্তা বিমানবন্দর থেকে ১১ নটিক্যাল মাইল দূরে জাভা সাগরে ভেঙে পড়েছে সেটি। ল্যানক্যাং দ্বীপের কাছে সমুদ্রতল থেকে ১৫ মিটার নীচে নিমজ্জিত অবস্থায় বিমানটির ধ্বংসাবশেষ ও যাত্রীদের দেহের খোঁজ পান উদ্ধারকারীরা। ইন্দোনেশিয়ার পরিবহণ মন্ত্রক ও বিমান সংস্থার তরফে বিমান ভেঙে পড়ার খবর স্বীকার করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, বেলা ২.৩৬ মিনিটে ওড়ার পরই নির্দিষ্ট পথ থেকে সরে যায় বিমানটি। কারণ জানতে বিমানের চালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলার। কিন্তু তার জবাব আসার আগেই রেডার থেকে উধাও হয়ে যায় বিমানটি।
জাভা সাগরের একটি দ্বীপের কয়েকজন বাসিন্দা তখন ২টি নৌকায় সাগরে গিয়েছিলেন। তাঁরা ২টি প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান বলে জানিয়েছেন। এর পর একটি নৌকাকে ঘটনাস্থলে নোঙর করে অন্য নৌকায় করে পাড়ে এসে পুলিশকে খবর দেন। সমুদ্র থেকে ইতিমধ্যে বিমানের ধ্বংসাবশেষ ও যাত্রীদের জামাকাপড় উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উদ্ধারকাজে নেমেছে ইন্দোনেশিয়া সেনার জাহাজ। বিমানবন্দরে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। বিমানের আরোহীদের কেউই জীবিত নেই বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভেঙে পড়া বিমানটির বয়স প্রায় ২৭ বছর। ১৯৯৪ সালে প্রথম উড়েছিল বোয়িংয়ের বিমানটি। ইন্দোনেশিয়া-সহ দূরপ্রাচ্যের ঘরোয়া উড়ানসংস্থাগুলির বিমান রক্ষণাবেক্ষণের ইতিহাস বেশ ঢিলেঢালা। যার ফলে এই অঞ্চল থেকে মাঝে মধ্যেই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার খবর মেলে।