অরুণাচল প্রদেশে সদ্য সফরে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ৮২৫ কোটি টাকার সেলা টানেল উদ্বোধন করেন তিনি। এই টানেলের হাত ধরে চিনের সীমান্তবর্তী অরুণাচলে ভারতের সনা জওয়ানদের যাতায়াত যেমন সুবিধাজনক হবে, তেমনই অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রেও এই টানেল সুবিধা দেবে। এদিকে, অরুণাচলে মোদীর সফর নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে চিন। বেজিংয়ের তরফে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে কূটনৈতিক প্রতিবাদ।
প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অরুণাচল সফর নিয়ে চিনের ক্ষোভের কী কারণ থাকতে পারে? উল্লেখ্য, চিনের দাবি, ভারতের অরুণাচল প্রদেশ তাদের দক্ষিণ তিব্বতের অংশ। ফলে যে কোনও ভারতীয় নেতা অরুণাচল প্রদেশে সফর করলেই ক্রমাগত তাতে প্রতিবাদ জানিয়ে আসে বেজিং। যদিও চিনের এই প্রতিবাদে সেভাবে দিল্লি আমল দেয় না। এদিকে, চিন এই প্রতিবাদ জানিয়ে, বারবার অরুণাচলকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবিকে আরও জোরালো করতে চাইছে। যতবার চিন প্রতিবাদ করে ততবারই হাইলাইট হয় অরুণাচল নিয়ে তাদের দাবি। বেজিংয়ের এই কৌশল এবারেও জারি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অরুণাচল প্রদেশের সফরের বিরুদ্ধে বেজিংয় জানিয়েছে কূটনৈতিক প্রতিবাদ। উল্লেখ্য, নিজের মতো করে অরুণাচল প্রদেশের আলাদা নামও দিয়েছে চিন। অরুণাচল প্রদেশকে চিনের দেওয়া নাম হল জাংনান। চিনের অই সমস্ত কৌশলকে বারবার নস্যাৎ করেছে কেন্দ্র। অরুণাচলের এই নামকরণ নিয়ে ভারত বলেছে, এতে বাস্তব অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয় না।
এদিকে, অরুণাচল প্রদেশে শনিবার সফরে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ১৩ হাজার ফুট উপরে চিনের সীমান্তের কাছে সেলা টানেলের উদ্বোধন করেন মোদী। এই টানেলের সঙ্গে তাওয়াংয়ের যোগাযোগ সব মরশুমে ভালো হবে। এছাড়াও সেনার ট্রুপোর যাতায়াত ও অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে এই টানেল বেশ উপযোগী হতে চলেছে। এই বিপুল উচ্চতায় এমন বাইলেন রোড টানেল বিশ্বে সর্ববৃহৎ। অসম থেকে অরুণাচল পর্যন্ত এই রাস্তা দেশের স্ট্র্যাটেজিক ক্ষেত্রে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিকে, মোদীর সফর নিয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলছেন, ‘জাংজান এলাকা চিনের অংশ।’ তিনি বলছেন, ‘ চিন কখনওই ভারতের অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত তথাকথিত অরুণাচল প্রদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি এবং দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করেছে।’ তিনি বলছেন, চিনের জাংনান এলাকাকে যথেচ্ছভাবে গড়ে তোলার কোনো অধিকার ভারতের নেই। মোদীর অরুণাচল প্রদেশ সফর নিয়ে চিনের বিদেশমন্ত্রক বলছে,'ভারতের প্রাসঙ্গিক পদক্ষেপ শুধুমাত্র সীমানার প্রশ্নকে জটিল করে তোলে। চিন প্রবল অসন্তুষ্ট এবং চিন-ভারত সীমান্তের পূর্ব অংশে ওই নেতার সফরের দৃঢ় বিরোধিতা করে চিন।'