প্রমোদ গিরি
কালী ঝোরা (কালিম্পং)
বুধবারের মেঘভাঙা বৃষ্টিতে কার্যত বিপর্যস্ত সিকিম। নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের খোঁজ পেতে ক্রমাগত অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৫৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ২৩ জন সেনা জওয়ানও রয়েছে। এখন পর্যন্ত চারটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় জানতে পারা গিয়েছে।
পাকিয়ং জেলার বারদাং-এ একটি সেনা ক্যাম্প ছিলে যদি তিস্তা নদীর জলে ভেসে গিয়েছে। পাকিংয় জেলার এক প্রশাসনিক আধিকারিক বলেন, 'নিখোঁজ ব্যক্তি এবং সেনা সদস্যের কেউ কেউ ধসে চাপা পড়ে যেতে পারেন। কারও বা তিস্তাতে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খনন এবং উদ্ধারকাজ চলছে।'
উত্তর সিকিমের মাঙ্গান জেলা, যেখানে ভারতে দ্বিতীয় বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থিত, সেখানকার জেলা কালেক্টর এইচকে ছেত্রী হিন্দুস্তান টাইমসে বলেন,'এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা চারজন। বেশ কয়েকজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।'
লোনার্ক হ্রদ ভেসে গিয়েছে তা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিবি বলেন, 'এ নিয়ে রাজ্য সরকারে পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করা হবে।' তিস্তার উর্জা প্রকল্পের বাঁধ এবং সেতু ভেসে যাওয়া ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৩ হাজারেরও বেশি পর্যটক উত্তর সিকিমের লাচেন এবং লাচুং-এর মতো জায়গায় আটকে পড়েছেন। এই এলাকায়গুলি মাঙ্গান জেলার অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
(পড়তে পারেন। কীভাবে সিকিমে শুরু হয় ভয়াবহ বন্যা? বিভীষিকা ফুটে উঠল ইসরোর উপগ্রহ চিত্রে)
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন,'আটকে পড়া পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়ার একমাত্র উপায় বল এয়ারলিফটিং। তবে এলাকায় এখনও বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেই এয়ারলিফটিং-এর কাজ করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।'
তিনি বলেন,'আটকে পড়া পর্যটকদের কী অবস্থা তা জানার জন্যও আমরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।'
তিনি আরও বলেন,'দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের পরিবারের লোক আমাদের ফোন করছেন। তাঁর তাঁদের আটকে পরা আত্মীয়ের কথা জানেত চাইছেন কিন্তু আমরা কোনও উত্তর দিতে পারছি না।'
জাতীয় সড়ক ১০-এর বিভিন্ন জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সিকিম এবং কালিম্পং কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কালিম্পংয়ের তিস্তা বাজার এলাকা পরিদর্শন করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁকে ভাসুয়া থেকেই ফিরে আসতে হয়। ভাসুয়ায়র কাছে জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে।