উয়েফার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টুর্নামেন্ট ইউরোপা লিগে ৭ বছর পর খেলতে নেমেছিল লিভারপুল। ২০১৬ ফাইনালে সেভিয়ার কাছে হারের পর এই প্রথম বার। আর সেই ম্যাচে অস্ট্রিয়ান ক্লাব লাস্কের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও, শেষ পর্যন্ত ৩-১ জয় ছিনিয়ে নেন লিভারপুল। লিভারপুলের ইতিহাসে প্রথম কোচ হিসেবে ইউরোপে এটি জুরগেন ক্লপের ৫০তম জয়।
৪৯টি ম্যাচ জিতে রাফায়েল বেনিতেজের সঙ্গে এত দিন এই জায়গাটি ভাগ করে নিয়েছিলেন ক্লপ। বৃহস্পবিরা রাতে লিভারপুলের জয়ের পর রেকর্ডটি এখন একক ভাবে ক্লপের ঝুলিতে। তবে সংবাদিক সম্মেলনে ক্লপ বিষয়টিকে অতটা পাত্তা দিলেন না। সম্ভবত এই মঞ্চে নয়, ইউরোপের সবচেয়ে অভিজাত টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়নস লিগে রেকর্ডটি গড়তে পারলে খুশি হতেন ক্লপ। কারণ, লিভারপুলের মতো ক্লাবের কাছে সমর্থকদের প্রত্যাশার পারদটা একটু উঁচুতেই থাকে সব সময়ে।
কিন্তু গত মরশুমে লিভারপুল লিগ টেবলের পাঁচ নম্বরে শেষ করায় ইউরোপা লিগ খেলতে হচ্ছে লিভারপুলকে। ক্লপ সেই বাস্তবতা মেনে নিলেও, সমর্থকদের উদাহরণ টেনে এই রেকর্ড নিয়ে বলেছেন, ‘গ্রুপ পর্বের পরও যদি ৫০ (জয়) থাকে, এমন কী লিভারপুল কোচ হিসাবে ইউরোপে যদি সবচেয়ে বেশি ম্যাচও জিতি, তবু লোকে এটা ঘৃণা করবে।’
এদিনের ম্যাচে একাদশে একটি-দু'টি নয়, ১১টি পরিবর্তন করেন ক্লপ অর্থাৎ পুরো দলই পাল্টে ফেলেন। এই পরিবর্তনের ফলটা প্রথমার্ধেই টের পেয়েছে লিভারপুল। ১৪ মিনিটে মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান ফ্লেকারের গোলে এগিয়ে যায় লাস্ক। গোলের খোঁজে মরিয়া ক্লপ দ্বিতীয়ার্ধে অপেক্ষাকৃত তরুণদের তুলে এক–এক করে মাঠে নামান দারউইন নুনেজ, আলেক্সিস ম্যাক-অ্যালিস্টার এবং ডমিনিক সোবোসলাইদের মতো তারকাদের। লিভারপুলের খেলার ধারও তাতে বেড়েছে।
আরও পড়ুন: রক্ষণ আর গুরপ্রীতের দু'টি ভুলে হার বেঙ্গালুরুর, বদলা পূরণ করে ISL অভিযান শুরু কেরালার
ম্যাচের ১৪ মিনিটে কর্নার থেকে সাশা হোর্ভাথের ক্রস ডি-বক্সের বাইরে অরক্ষিত থাকা ফ্লোরিয়ান ফ্লেকার ডান পায়ের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণে নেন। সেখান থেকেই জোরালো শটে লিভারপুলের জাল কাঁপান ২৭ বছর বয়সী এ অস্ট্রিয়ান উইঙ্গার। বিরতিতে ০-১ পিছিয়ে ছিল লিভারপুল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকেই তারা সমতা ফেরায়। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে পেনাল্টির সৌজন্যে সমতা ফেরায় ক্লপের দল। লুইস দিয়াজকে ডি-বক্সে ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেন ফিলিপ জিয়েরিস। মহম্মদ সালাহর অনুপস্থিতিতে স্পট কিক নেন ডারউইন নুনেজ। বল জালে জড়াতে নুনেজ কোনও ভুল করেননি। এর ৭ মিনিট পরেই লিড পেয়ে যায় ইংলিশ জায়ান্টরা।
নিজেদের বক্স থেকে বল নিয়ে ডানপ্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠে ডি-বক্সের ভিতর লুইস দিয়াজকে পাস বাড়ান ডাচ মিডফিল্ডার রায়ান গ্রাভেনবার্ক। দ্রুত দৌড়ে ছয় গজ দূরত্ব থেকে লিনজার অ্যাথলেটিক স্পোর্ট ক্লাবের গোলরক্ষককে ওয়ান অন ওয়ান পজিশনে পরাস্ত করেন দিয়াজ। ৭৪ মিনিটে মহম্মদ সালাহকে মাঠে নামান ক্লপ। তিনি মাঠে নামলে আক্রমণে ধার বাড়ে লিভারপুলের। যার ফল হাতেনাতে পায় লিভারপুল। ৮৩ মিনিটে নুনেজের পাস থেকে গোল করে ৩-১ করেন সালাহ।
সালাহ এই গোলের হাত ধরেই থিয়েরি অঁরির একটি রেকর্ডে ভাগ বসালেন। ইংলিশ ক্লাবের হয়ে ইউরোপের বড় টুর্নামেন্টে এত দিন সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি (৪২) একার দখলে রেখেছিলেন ফরাসি কিংবদন্তি। বৃহস্পতিবার রাতে ৪২তম গোল করে সেই রেকর্ডে ভাগ বসালেন সালাহ।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।