এ বছর রাজ্যে ভয়াবহ আকার নিয়েছে ডেঙ্গি। শীত পড়তেই ডেঙ্গির প্রকোপ কিছুটা কমেছে ঠিকই। কিন্তু ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার পরে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন বিরল রোগে। এমনই বিরল রোগের আক্রান্ত হলেন উত্তর চব্বিশ পরগনার গারুলিয়ার বাসিন্দা পিন্টু রজক। এই রোগের নাম হল পোস্ট ডেঙ্গি অ্যাকিউট ডিসেমিনেটেড এনসেফ্যালোমায়লাইটিস অ্যান্ড গুলেনবেরি সিনড্রোম। এর ফলে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে অসাড় হয়ে পড়েছে ওই রোগীর সারা শরীর। স্বাভাবিকভাবে উদ্বিগ্ন ওই রোগীর পরিবার।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৬ অক্টোবর জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন পিন্টু। তাঁর রক্ত পরীক্ষা করা হলে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। বারাকপুরের বি এন বসু মহকুমা হাসপাতালে ওই ব্যক্তির চিকিৎসা করা হয়। তাতে বেশ কয়েক দিনের মাথায় জ্বর কমে যায়। কিন্তু ডেঙ্গি কমলেও নতুন বিপদ দেখা দেয়। ওই ব্যক্তির হাত-পা, মুখসহ সারা শরীর অসাড় হয়ে পড়েছিল। এমনকি ঠিকমতো নিঃশ্বাসটুকুও নিতে পারছিলেন না। এক প্রকার তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সিটি স্ক্যান সহ যাবতীয় পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানতে পারেন ওই ব্যক্তি এই বিরল রোগে আক্রান্ত।
কী এই রোগ?
চিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণত ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর এই ধরনের রোগ দেখা দেয়। তবে তা খুবই কমজনের হয়ে থাকে। এটি এক ধরনের বিরল রোগ। এর ফলে রোগীর শরীর অসাড় হওয়ার পাশাপাশি কোমায় চলে যান রোগী। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, নির্দিষ্ট সময়ে এই রোগ ধরা না গেলে সে ক্ষেত্রে বড় বিপদ ঘটতে পারে। যদিও ডেঙ্গি পরিবর্তী সময়ে এই ধরনের রোগ আগে দেখতে পাননি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে সঠিক সময় রোগীর চিকিৎসা করলে রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পিন্টু রজক ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রথমের দিকে তিনি হাঁটতে না পারলেও পরে ওয়াকারের সাহায্যে তাঁকে হাটানোর চেষ্টা করা হয়। বর্তমানে তিনি একাই হাঁটার চেষ্টা করছেন। অল্প দিনের মধ্যেই তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।