কোচবিহারের অন্যতম বড় উৎসব রাস উৎসব। কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর মদনমোহন মন্দির প্রাঙ্গনে বসানো হয় রাসচক্র। আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই উৎসবকে ঘিরে আজও কোচবিহারে তৈরি হয় সম্প্রীতির বাতাবরণ। সেই রাজ আমল থেকেই এই সম্প্রীতি আজও অটুট কোচবিহারে। বছরের পর বছর ধরে এক মুসলিম পরিবার এই রাসচক্র তৈরির দায়িত্ব পালন করে। বর্তমানে আলতাফ মিঁয়া এই রাসচক্র বানান। তিনি কিছুটা অসুস্থ বর্তমানে। সম্প্রতি কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্য়ান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ আলতাফের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন ও সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
একেবারে তিন পুরুষ ধরে এই রাসচক্র তৈরির কাজে যুক্ত আলতাফের পরিবার। আলতাফের স্ত্রী বাবলি বিবি তাঁর স্বামীকে রাসচক্র তৈরির কাজে সহায়তা করেন। দীর্ঘকালের প্রাচীন এই রাস উৎসব। সেই উৎসব যেন সম্প্রীতির এক মিলনক্ষেত্র। আলতাফের বানানো রাসচক্রই ঘোরান রাসমেলাতে ঘুরতে আসা মানুষ। সেই রাসচক্র ঘুরিয়েই শুরু হয় রাস মেলা। সেই রাসচক্রকে স্পর্শ করে আজও পূণ্য অর্জন করার চেষ্টা করেন অনেকেই। আবহমান কাল ধরে এই বিশ্বাস চলে আসছে আজও। হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম সংস্কৃতির সংমিশ্রনে তৈরি হয় এই রাসচক্র।
লক্ষ্মীপুজোর দিনে রীতিমতো উপোস করে রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন আলতাফ মিঁয়া। ধীরে ধীরে রূপ পাচ্ছে রাসচক্র। রাসচক্র তৈরির সময় তিনি নিরামিষও খান। অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে তিনি এই রাসচক্র তৈরির কাজ করেন। এই রাসচক্রকে কেন্দ্র করেই রাস উৎসবের দিনগুলিতে মেতে ওঠেন বাসিন্দারা। উত্তর পূর্বভারত থেকেও প্রচুর পর্যটক রাসমেলা দেখতে কোচবিহারে আসেন।