জনপ্রতিনিধিদের এখনই টিকা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পইপই করে একই কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই নির্দেশ উড়িয়ে দিয়ে প্রথম দিনেই করোনাভাইরাস টিকা নিলেন কমপক্ষে দু'জন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। টিকা পেলেন এক প্রাক্তন বিধায়কও। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই এক সাফাই - রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তাঁরা।
শনিবার দেশজুড়ে টিকাকরণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনার পর কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ৩৪ জন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা প্রদান করা হয়। তারপরই হাসপাতালে আসেন কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা পুরপ্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। নেন করোনা টিকার প্রথম ডোজ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ আছে যে প্রথম দফায় শুধুমাত্র প্রথমসারির করোনা যোদ্ধাদের টিকা প্রদান করা যাবে, তারপরও কোন যুক্তিতে টিকা পেলেন কাটোয়ার বিধায়ক?
সেই বিতর্কের সাফাই হিসেবে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা রোগী কল্যাণ সমিতির সঙ্গে যুক্ত আছেন, টিকাকরণের জন্য তাদের নাম দেওয়া হয়েছে। সমিতির চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে কাটোয়ার বিধায়কের নামও পাঠানো হয়েছিল। সেজন্য তাঁকে প্রথম দিনেই টিকা প্রদান করা হয়েছে। সেই সাফাইয়ে অবশ্য বিতর্ক কমেনি। প্রশ্ন উঠছে, রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য কি আদৌও প্রথমসারির করোনা যোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন? সেই প্রশ্নের কচকচানিতে অবশ্য ঢোকেননি বিধায়ক। বিতর্ক নিয়ে কথা না বাড়িয়ে তাঁর জবাব, তালিকায় তাঁর নামে এসেছিল। সেজন্যই তিনি টিকা নিতে এসেছিলেন।
তবে কাটোয়ার বিধায়ক নন, রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য হওয়ার কারণে প্রথম দিনেই টিকা নেওয়ার তালিকায় আছেন ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক সুভাষ মণ্ডল এবং প্রাক্তন বিধায়ক বনমালি হাজরা। শনিবার ভাতার স্টেট জেনারেলে হাসপাতালে টিকা নেন তাঁরা। সুভাষকে দিয়ে তো টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় জানিয়েছেন, সুভাষ এবং বনমালি রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য। প্রয়োজনে হাসপাতালের পাশে আছেন। তাই তাঁদের টিকা দেওয়া হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
তবে টিকা প্রাপকদের তালিকায় আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর নাম থাকা প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র তাপস রায় বলেছিলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকর্মীরাই টিকা পাবেন।’ তার জেরে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও কীভাবে তিনজন করোনা টিকা নিয়েছেন?