কলকাতা হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরও রাজ্যে কিছুদিন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। যাতে ভোট পরবর্তী হিংসা না হয়। কিন্তু এই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে থাকতে দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলিতে। ফলে সেখানে নিয়মিত পঠনপাঠন হচ্ছে না বলে অভিযোগ। আবার স্কুল বন্ধ থাকা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা। এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন দাসপুর ১ নম্বর ব্লকের পাঁচবেড়িয়া রামচন্দ্র স্মৃতি শিক্ষা মন্দির স্কুল কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার ফলে পড়ুয়ারা উৎকণ্ঠায় রয়েছে, স্কুলের পরীক্ষা ঠিক সময়ে হবে তো?
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট ৫ কোম্পানি বাহিনী আসে দাসপুরে। তাঁদের নানা ক্যাম্পে রাখা হয়। আর রাখা হয় পাঁচবেড়িয়ার এই স্কুলে। ভোট মিটলে এক কোম্পানি বাহিনী সরে গেলেও ভোট পরবর্তী হিংসার আশঙ্কায় দাসপুরজুড়ে রেখে দেওয়া হয় ৪ কোম্পানি। তারা কবে স্কুল ছাড়বে? সেটা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই আবহে অগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই স্কুলে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ণ শুরু হবে। সেখানে গত ৬ জুলাই থেকে স্কুলে পড়াশোনা লাটে উঠেছে। শেষ হয়নি সিলেবাস! তাই পরীক্ষা আদৌ হবে কি না সেটা নিয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছে পড়ুয়ারা। অভিভাবকদের অভিযোগ, এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্যই ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় প্রভাব পড়ছে।
ঠিক কী বলছে পড়ুয়ারা? পাঁচবড়িয়া রামচন্দ্র স্মৃতি শিক্ষামন্দির স্কুলে গিয়েও ফিরে আসতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। এই বিষয়টি নিয়ে নবম শ্রেণীর ছাত্র কৃষ্ণেন্দু বেরা ও সৌনক বেরা সংবাদমাধ্যমে বলে, ‘সামনে পরীক্ষা। কিছুই বুঝতে পারছি না। কারণ স্কুলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কোনও তথ্য মিলছে না। রোজ একবার করে স্কুলে আসি। দেখি স্কুল খুলেছে কিনা। কবে খুলবে? তার কোনও খবর মেলে কিনা। কিন্তু রোজই আমরা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরি।’ সুতরাং সঠিক সময়ে পরীক্ষা হবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে পড়ুয়াদের মনে।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের ভরাডুবি কেন? মণ্ডল সভাপতিদের দায়ী করে রিপোর্ট বিজেপির
ঠিক কী বলছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ? এই কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকা এবং তার জেরে স্কুল বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছে পড়ুয়ারা। তার জেরে ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা। এই বিষয়টি নিয়ে স্কুলের সভাপতি সদানন্দ সামন্ত সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এতদিন স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় খুব ক্ষতি হচ্ছে। তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে। কিন্তু নির্দিষ্ট অর্ডার না আসায় আমরা এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। কবে কেন্দ্রীয় বাহিনী স্কুল থেকে ক্যাম্প সরিয়ে নিয়ে যাবে? সেটার জবাব পাইনি।’ সুতরাং এখনও স্কুলের গেটের বাইরে ঘুরেই বাড়ি ফিরতে হবে পড়ুয়াদের। গেট তাদের জন্য কবে খোলে এখন সেটাই দেখার।